বিশেষ সংবাদদাতা: আজ সোমবার চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র গৌতম হত্যা মামলায় আদালতে দ্বিতীয় পর্যায়ে দু’জন সাক্ষ্য দেবেন। রোববার সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য থাকলেও জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে যতীন সরকার ও বিশ্বনাথ সরকারের সাক্ষী গ্রহণ করেননি। তবে হাইকোটের্র জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় কবিরুল ইসলাম মিঠুকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামীরা হলেন সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের আলী আহম্মেদ শাওন, ভাড়–খালি গ্রামের শাহাদাৎ হোসেন, নাজমুল হোসেন, ওমর ফারুক, নূর আহম্মেদ মুক্ত, মহাদেবনগর গ্রামের সাজু শেখ, মহসিন আলী, কবিরুল ইসলাম মিঠু, জামসেদ আলী ও ফিরোজা খাতুন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের মহাদেবনগর গ্রামের ইউপি সদস্য গনেশ সরকারের ছেলে সীমান্ত ডিগ্রী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র গৌতম সরকারকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে তার বাড়ির পাশে মোকলেছুর রহমানের নির্মাণাধীন বাড়িতে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তার গালের মধ্যে গুলের কৌটা ঢুকিয়ে মুখে ক্রস টেপ সেঁেট দেওয়া হয়। পরে লাশের বিভিন্ন স্থানে দড়ি দিয়ে ১২টি ইট ঝুলিয়ে পার্শ্ববর্তী মোকলেছুর রহমানের পুকুরে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। নিহতের পিতা গনেশ সরকার বাদি হয়ে আলী আহম্মেদ শাওন, শাহাদাৎ হোসেন, সাজু শেখ, নাজমুল হোসেন, মুহসিন আলী, কবিরুল ইসলাম মিঠুর নামে ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আসামীদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরদিন ওমর ফারুক, নূর আহম্মেদ মুক্ত ও জামসেদের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি সম্পূরক অভিযোগ দায়ের করা হয়। নাজমুল, শাহাদাৎ ও সাজু শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
এ ঘটনায় পুলিশ সাজু শেখের মা ফিরোজা খাতুনকে গ্রেফতার করে। ২৯ ডিসেম্বর সম্পূরক অভিযোগটি আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে গত বছরের ৫ জানুয়ারি মমালার তদন্তভার ডিবি পুলিশে ন্যস্ত করা হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম গত বছরের ১৮ এপ্রিল উপরোক্ত ১০ আসামীর নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগত্র দাখিল করেন। পহেলা মার্চ সকল আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠণ করা হয়।
গ্রেফতারের পর থেকে শাহাদাৎ হোসেন ও নাজমুল হোসেন জেল হাজতে রয়েছেন। জামিনে মুক্তি পেয়ে ফিরোজা খাতুন, আলী আহম্মেদ শাওন ও সাজু শেখ পলাতক রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. ওসমান গনি জানান, অভিযোগ গঠনের পর আগামী ১৮,১৯ ও ২০ মার্চ সাক্ষীর জন্য প্রথম দিন ধার্য করে আলী আহম্মেদ শাওন, সাজু শেখ ও ফিরোজা খাতুনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। প্রথম দফায় মামলার বাদি গণেশ ম-ল, মুদি দোকানদার রুহুল আমিন ও পুকুর মালিত মোকলেছুর রহমান আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় ২৪ ,২৫ ও ২৬ জুন দিন ধার্য করা হয়। যতীন সরকার ও বিশ্বনাথ সরকার রোববার আদালতে সাক্ষী দিতে এলে আদালত বিশেষ কারণে তা গ্রহণ না করে সোমবার দিন ধার্য করেছেন। তবে আসামী কবিরুল ইসলাম মিঠুর হাইকোর্টের জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
Leave a Reply