নিজস্ব পতিনিধিঁ:
সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা দৈনিক পত্রদূত সম্পাদক গণমানুষের নেতা শহীদ স. ম. আলাউদ্দিনের খুনিদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের কর্মসূচি চলবেই। স. ম. আলাউদ্দিন বেঁচে থাকবেন তার কর্মের মাঝে। খুনিরা আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। খুনিদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। স. ম. আলাউদ্দিনের খুনি ও খুনিদের কাছ থেকে সুবিধাভোগিদেরও সামাজিকভাবে চিহ্নিত করে বয়কট করতে হবে। এমনই আহ্বানের মধ্য দিয়ে ১৯জুন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আয়োজনে দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য স. ম. আলাউদ্দিনের ২২তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত হয়েছে।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১০টায় শহীদ স. ম. আলাউদ্দিনের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পন ও তার আত্মার শান্তি কামনায় মাজার জিয়ারত করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকগণ। এরপর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের শহীদ স. ম. আলাউদ্দিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুল ওয়াজেদ কচি। বক্তব্য রাখেন দৈনিক পত্রদূতের সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহিম, দৈনিক দক্ষিণের মশালের সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার কল্যাণ ব্যানার্জী, শহীদ স. ম. আলাউদ্দিন তনয়া ও দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি জিএম মনিরুল ইসলাম মিনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, মমতাজ আহমেদ বাপী, এম কামরুজ্জামান, রুহুল কুদ্দুস, সাংবাদিক কাজী শওকত হোসেন ময়না, গোলাম সরোয়ার, ড. দিলিপ কুমার দেব, শরিফুল্লাহ কায়সার সুমন, আবুল কাশেম, মোশাররফ হোসেন, অসীম বরণ চক্রবর্তী, কালীদাস রায়, সেলিম রেজা মুকুল, মো. আব্দুল গফুর সরদার, সাখাওয়াত উল্যাহ ও আমিনুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ, কবি ও সাহিত্যিক গাজী শাহাজান সিরাজ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল বারী। এসময় ইলেক্ট্রনিক্স, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় প্রত্যেক বক্তা শহীদ স. ম আউদ্দিনের খুনিদের বিচার দাবি করে খুনিদের সামাজিকভাবে বয়কট করার আহ্বান জানান। খুনিদের বিচার তথা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের কর্মসূচি চলবেই চলবে বলে সিদ্ধান্ত নেন। বক্তারা সাতক্ষীরার সামগ্রিক উন্নয়নে শহীদ স. ম আলাউদ্দিনের স্বপ্ন চিন্তা ও অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। ভোমরা স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা, চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠা, শ্রমিক লীগ প্রতিষ্ঠা, বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা, আলাউদ্দিন বিস্কুট ফ্যাক্টরী প্রতিষ্ঠা, ট্রাক টার্মিনাল প্রতিষ্ঠাসহ কৃষি শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
সভায় আগামী ২৫ জুন সোমবার সকাল ১০ টায় শহীদ আলাউদ্দীন চত্বর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আয়োজনে মানববন্ধ কর্মসূচী পালন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচীতে সকল সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার জন্য প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল বারী আহবান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত: ১৯৯৬ সালের ১৯ জুন রাত ১০টা ২৩ মিনিটে নিজ পত্রিকা অফিসে কর্মরত অবস্থায় সাতক্ষীরার গডফাদারদের ভাড়া করা কিলারের কাটা রাইফেলের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হন শহীদ স. ম. আলাউদ্দিন।
এঘটনায় নিহতের ভাই শহীদ স. ম. নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ১০ মে সিআইডির খুলনা জোনের এএসপি খন্দকার ইকবাল হোসেন সাতক্ষীরার চিহ্নিত সন্ত্রাসী গডফাদারসহ ১০ জনের নামে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। ১৪ বছর আইনগত জটিলতা সৃষ্টি করে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম উচ্চ আদালতের নির্দেশে বন্ধ ছিল। আইনী জটিলতা নিরসন শেষে ২০১২ সালে মামলাটির পুনরায় বিচার কাজ শুরু হয়। কিন্তু মামলাটির বিচার কাজ আজও শেষ হয়নি।
ইতোমধ্যে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার ৩৬ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের স্বাক্ষ্য সম্পন্ন হয়েছে। ৫/৭জন স্বাক্ষী মারা গেছে। ২/৩ জন রয়েছে দেশের বাইরে। আগামী ২৭ জুন মামলার পরবর্তী স্বাক্ষীর দিন রয়েছে। এভাবেই কেটে গেছে ২২টি বছর। মামলার প্রভাবশালী আসামী কুখ্যাত চোরাকারবারি গডফাদার ভূমিদস্যু সবুর তার সহযোগী আরেক গডফাদার খলিলুল্লাহ ঝড়ুসহ তার ভাই কিসলু (মৃত), মোহন, নগরঘাটার রউফ, তার শ্যালক কালাম, এসকেন, সাইফুল, শফি ও আতিয়ার।
Leave a Reply