টানা ২২ দিনের জন্য নদী ও সাগরে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শুরু হয়েছে আজ থেকে। এই সময়ের মধ্যে ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা, মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয় করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে দিয়ে এ বছরের ইলিশের মৌসুম শেষ হচ্ছে।
মৎস্য অধিদপ্তর এক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন-২০২০’ এর ধারা ৩(২) মোতাবেক বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ এলাকায় ইলিশসহ সকল প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা হলো।
এরই ধারাবাহিকতায় ইলিশের বাড়িখ্যাত চাঁদপুরের মতলবের ষাটনল থেকে লক্ষীপুরের আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার অভয়াআশ্রমে শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে নৌ-পুলিশের পাশাপাশি টহল শুরু করেছেন কোস্ট গার্ডের সদস্যরা।
শনিবার বিকেলে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়নে চাঁদপুরে র্যালি ও সচেতনতামূলক সভা হয়েছে। চাঁদপুর শহরের তিন নদীর মোহনা মোলহেডে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য অধিদপ্তর এই সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘নিজের বাড়িতে নিজে যদি নিরাপদ থাকি তাহলে ইলিশের বাড়িতে ইলিশ কেন নিরাপদে থাকবে না। আমাদের দেখাতে হবে ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে ইলিশ নিরাপদ। আইনের প্রয়োগ করতে আমরা চাচ্ছি না। আমরা চাই, নিজের সম্পদকে নিজেরা রক্ষা করবেন। ইলিশ মাছ আমাদের জাতীয় সম্পদ। নিজের সম্পদকে কেন ধ্বংস করবেন। ইলিশ যেহেতু রাষ্ট্রের সম্পদ, আপনার স্বার্থ থাকবে রাষ্ট্রের জন্যে। দেশের সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব সবার।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ভুল করলে মাফ পাওয়া যায়, কিন্তু অপরাধ করলে মাফ পাওয়া যাবে না। ২২ দিন নদীতে মাছ ধরলে তা অপরাধ হবে। চাঁদপুরের সবগুলো বরফ কল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নদীতে যাত্রী পারাপার ছাড়া কোন স্পিডবোট চলবে না। চুরি করে যে মাছ বাজারে বিক্রি করবেন, সে বাজারগুলোতে আমরা মনিটরিং করবো।’
মাছ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘চাঁদপুরে ইলিশের দাম কমাতে হবে। সাধারণ মানুষের নাগালে নিয়ে আসতে হবে। ইলিশ মাছ উৎপাদনে কারও কোন বিনিয়োগ করতে হয় না, তাহলে কেন ইলিশের দাম বাড়বে। আপনাদের লোভ কমাতে হবে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে কেউ নদীতে নামলে এক কিংবা দুই বছরের জেল এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।
Leave a Reply