সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার আশাশুনিতে সরকার পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে অবৈধভাবে ইটাভাটা দখল পূর্বক লক্ষ লক্ষ টাকার ইট বিক্রয় করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাতক্ষীরা শহরের বাটকেখালী গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুত্র মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, আমার পিতা আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নে ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে মেসার্স গাজী বিক্রস নামীয় একটি ইটভাটা প্রতিষ্ঠা করে। ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দুই বছর ব্যবসা ভালো চললেও অনেকের কাছে ইট বিক্রির টাকা অনাদায়ী থাকায় চরম অর্থ সংকটে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে ইটভাটাটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা উদ্দেশ্যে ভাটার ম্যানেজার সোহরাব হোসেন তার নিকট আত্মীয় চাপড়া এলাকার মৃত আব্দুর রবের পুত্র রাশেদ আহমেদ খোকার সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। অর্থ সংকট থাকায় উপায়ন্তর হয়ে রাশেদ আহমেদ খোকার সাথে ০১/১১/২০১৪ তারিখে একটি ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র করি। কিন্তু চুক্তির পর আমাদের কোনঠাসা করে ফেলে ইচ্ছামত ইটভাটা পরিচালনা করতে থাকে খোকা। লাভ ক্ষতির কোন হিসাব না দিয়ে ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দুই বছরের লাভের যাবতীয় টাকা রাশেদ আহমেদ খোকা নিজে আত্মসাত করে। ব্যবসায়িক চুক্তিভঙ্গ করায় তার সাথে ব্যবসা না করার ঘোষনা দিয়ে আমার পিতা তৎকালিন পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু খোকা সেখানে হাজির হলেও তার অসহযোগিতার কারনে সমাধান হয়নি। পরে আশাশুনি থানায় অভিযোগ দিলেও কোন সমাধান না হওয়ায় তৎকালিন আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান দুইবছরের হিসাবের কথা বললে রাশেদ আহমেদ খোকা তালবাহানা করতে থাকে। দুই বার বসাবসি হলেও কোন সমাধান হয়নি। পরে ২০১৬ সালে তৃতীয়বার বসাবসিলে সমাধান না হওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন যার নামে লাইসেন্স তিনিই ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারবেন। সে সময় আমার পিতা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করি। ব্যবসা পরিচালনার জন্য বেসিক ব্যাংক থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা ঋণ করি। ২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ৮ বছর এককভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। এদীর্ঘ ৮ বছরে রাশেদ আহমেদ খোকা কোথাও কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। অথচ ০৫ আগস্ট‘২৪ ছাত্র অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশে আইন শৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ০৬ আগস্ট ৪০/৫০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের ইটভাটাটি দখল করে নেয়। এতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ভাটার কর্মচারী এবং আমাকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়। ভাটায় ১৬ লক্ষ ইট মজুদ ছিলো। ওই ইটগুলো কমমূল্যে বিক্রয় করে সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছে খোকা। এছাড়া ভাটায় থাকা মেশিন, মাছ, হাঁস মুরগিসহ অন্যান্য মালামালসহ প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা লুটপাট করেছে। এছাড়া ওই ভাড়াটিয়া বাহিনীর সহযোগিতায় ভাটাটি এখনো দখল করে রেখেছে। ফলে আমি চরম অর্থ সংকটে পড়েছি। বিশেষ করে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো সে চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। ওই পরসম্পদ লোভী খোকার হাত থেকে আমার ভাটাটি উদ্ধার করতে না পারলে পথে বসতে হবে।
তিনি খোকার কবল থেকে ভাটাটি উদ্ধার পূর্বক সমুদয় অর্থ ফেরত পাওয়ার দাবীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Leave a Reply