৫ আগষ্ট বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পরবর্তী ভেঙেপড়া
থানাপুলিশের কার্যক্রমকে কাজে লাগিয়ে সাতক্ষীরার দেবহাটা
উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের খলিষাখালিতে বসবাসরত
ভূমিহীনদের উপর বোমা ও গুলি চালানো হয়েছে। হামলায় ৫ জন
ভূমিহীন জখম হয়েছে।সোমবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে দেড়
ঘণ্টাব্যাপি এ হামলায় এলাকায় ওইজনপদে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আহতদের সাতক্ষীরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আহতরা হলেন, দেবহাটার খলিশাখালির মৃত আবু বক্কর গাজীর ছেলে
সাইফুল ইসলাম (৩৫), একই গ্রামের রুস্তুম সরদারের ছেলে আল
আমিন (২৫), কামরুল গাজীর ছেলে আব্দুল ওহাব(১৯), খলিষাখালি
(কাটাখালি) গ্রামের মজিদ গাজীর ছেলে মহিব হাসান (১৭),
নোড়ারচকের মৃত আব্দুস সোবহানের ছেলে রিয়াজ আহম্মেদ (৪০)
ও একই গ্রামের হামিজউদ্দিন পাড়ের ছেলে হাফিজুর রহমান (২৫) ।
সাতক্ষীরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা খলিষাখালি
গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে
তিনিসহ সাপমারা খাল কাটানোর সময় দুই পাশ থেকে উচ্ছেদ
হওয়া তিন শতাধিক ভূমিহীন পরিবারসহ ৭৮৫টি ভূমিহীন পরবিার
সাতক্ষীরার যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালত থেকে মহামান্য
সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ পর্যন্ত লাওয়ারিশ সম্পত্তিতে
বসবাস করে আসছিলেন। মহামান্য হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
জারির নির্দেশ থাকার পরও ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর পুলিশের
সহায়তায় ভূমিদস্যুরা তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এরপর তারা
আশ্রয়হীন হলেও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করতে
থাকেন। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি মহামান্য সুপ্রিক কোর্টের
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ সদেস্যর বেঞ্চ জমির মালিক
দাবিদারদের দায়েরকৃত সিভিল রিভিউ পিটিশন ১৬৮/২১ খারিজ
করে দেন। এরপর ওই জমি কৌশলে জবরদখল শুরু করেন নলতা ইউপি
চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আরিজুল ইসলাম, পারুলিয়া ইউপি
চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা গোলাম ফারুেক বাবু, নওয়াপাড়া
ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রেজাউল ইসলাম,
মাটি কোমরার মাছ আনারুল, ইন্দ্রনগরের মিলন বাবু, পারুলিয়ার
সেঝ খোকন, ইলতুত, আহসানিয়া মিশনের কর্মকর্তা ইকবাল
মাসুদসহ একটিমহল। সম্প্রতি তারা ওই জমিতে বসবাস শুরু করলে
আরিজুল ইসলামের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী তালা উপজেলার খলিলনগর
ইউনিয়নের মাছিয়াড়া গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে কমপক্ষে
একডজন অস্ত্র ও দস্যুতা মামলার আসামী আব্দুল হালিম (পাখরা),
নোড়ারচকের ইছাক গাজীর ছেলে কমপক্ষে ৬টি মামলার গ্রেপ্তারি
পরোয়ানা থাকা আনারুল ইসলাম,তার শ্যালক একই এলাকার
শাহজাহান গাজীর ছেলে রবিউল ইসলাম, চিংড়িখালির নয়াব আলীর
ছেলে শহীদুল ইসলাম, শওকত হোসেন, রবিউল ইসলাম ওরফে বুল্লা,
কুতুব মোড়ল, সন্ন্যাসীরচকের আবু তালেব গাজী, ইন্দ্রনগরের
মুর্শিদ, ইসরাফিল, সেকেন্দার আলী, আইয়ুব আলীসহ শতাধিক
সশস্ত্র সন্ত্রাসী সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাদের উপর
হামলা চালায়। হামলাকারিদের ছোঁড়া গুলি ও বোমায় তিনিসহ
পাঁচজন জখম হন। পুড়িয়ে দেয়া হয় খলিষাখালি চরের বাবলু মোড়ল,
শাহাদাৎ হোসেন ও মনিরুল ইসলামের বসত ঘর। বিষয়টি
তাৎক্ষণিকভাবে সেনা ক্যাম্প, উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয়
থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
Leave a Reply