আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলা সদরের মানিকখালী স্লুইচ গেটের রিভার সাইটে পাইপের মুখে ধ্বস নেমে জোয়ার ভাটার পানি উঠানামা করছে। যে কোন সময় ভাঙ্গনে গেটের অংশ বিশেষ ছুটে গিয়ে এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা বিরাজ করছে। ফলে এলাকার মানুষ চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন।
আশাশুনি উপজেলা পরিষদ হতে পূর্ব দিকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ক্ষতিগ্রস্ত মানিকখালী স্লুইচ গেটটি। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম জানান, পাকিস্তান আমলে নির্মীত এ গেটটি সংস্কারের অভাবে খুবই জীর্ণশীর্ণ হয়ে আছে। ২৫/৩০ বছর আগে একবার কোন রকমে একটু সংস্কার কাজ করা হয়েছিল। রক্ষণাবেক্ষণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন ভূমিকা না থাকায় এটি আরো জরাজীর্ন অবস্থায় পড়ে আছে। প্রায় এক বছর ধরে গেটটির নদীর দিকে দুফোকড়ের পাইপের মুখে ধ্বস নামে। বর্তমানে সেখানে আড়াই হাত-তিন হাত এলাকা জুড়ে বড় গর্তেও সৃষ্টি হয়েছে। বাইরের পাটা লাগানো থাকলেও ধ্বস নেমে ওয়াল থেকে পাইপ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে পানি ওঠা-নামা করছে। দিন দিন ওয়ালটি নদীর দিকে ঝুঁকে পড়ছে। যেকোন জোয়ার-ভাটায় সেটি নদীগর্ভে পড়ে গেলে গেট সহ ওয়াপদা রাস্তা ভেসে যেতে পারে। এতে জোয়ারের পানি ভেতরে ঢুকে প্লাবিত হতে পারে পুর্বের বিলের শতাধিক ছোট-বড় মৎস্য ঘের, উপজেলা সদরের অফিস এলাকা, হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির সহ আশাশুনি সদরের বাসিন্দারা। অফিস এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়লে প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে। এছাড়া গেটের ভিতরের মুখে লোনা লেগে পলেস্তারা উঠে ও ভেঙে যাওয়ায় পাঠ লাগানো যায়না। পাটা লাগানো থাকলেও পাট আটকে রাখার কলাম ভেঙ্গে যাওয়ায় পাট অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। ফলে জোয়ারের পানি ওঠা-নামায় প্রায়ই নিয়ন্ত্রন রাখা মুশকিলে পড়তে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বাঁশের সাথে দড়ি দিয়ে পাট টানা দিয়ে রাখা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, এ গেটটি দিয়ে শতাধিক ঘেরের পানি ওঠা-নামা করা সহ ১ ও ২ নং ওয়ার্ড এবং উপজেলা সদরের বৃষ্টির পানি নিস্কাশন হয়ে থাকে। জনগুরুত্বপুর্ন এই গেটটি রক্ষনা-বেক্ষনে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন খোঁজ খবর নেয় না। যতদ্রুত সম্ভব গেটটি সংস্কার করে পাইপের সাথে ওয়ালের সংযোগ স্থাপন করা সহ ভেতরের দিকে প্লাষ্টার করে পাট বসানোর উপযোগী করে তোলা প্রয়োজন।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, দীর্ঘদিন থেকে ঝুঁকিপুর্ণ এ অবস্থা চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলেছি কিন্তু তাদের ধীরগতির পদক্ষেপের ফলে সাধারণ মানুষ ও শতাধিক মাছ চাষীরা উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে আছে। এ ব্যপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস ও আবুল হোসেন জানান, চেয়ারম্যান মারফত গেটটির কথা শুনেছি। যতদ্রুত সম্ভব আমরা এটা মেরামতের চেষ্টা করছি।
Leave a Reply