1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৬ অপরাহ্ন
৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
Latest Posts
📰সাতক্ষীরা দেবহাটায় ছাত্রশিবিরের আন্ত:ওয়ার্ড ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত 📰আশাশুনির গাজীপুর মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এতিমের অর্থ আত্মসাৎ ও নিয়োগ বাণিজ্য রোধের আবেদন📰প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দীন📰আন্দোলনে সাধারণের পক্ষে দাঁড়িয়ে আস্থার প্রতীক হয়েছে সেনাবাহিনী : ড. ইউনূস📰অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা, সাতক্ষীরা সীমান্তে আটক ২📰উপকূলীয় জীবনের সুরক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে বাগেরহাটে মানববন্ধন📰‘উপকূলীয় নারীদের সফলতা ও জ্ঞানের কথা’ শীর্ষক অভিজ্ঞতা সভা📰বর্ণাঢ্য আয়োজনে সপ্তাহ ব্যাপি বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন📰আশাশুনির বুধহাটা ক্লাস্টারের দুরাবস্থাগ্রস্থ ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাণের ঝুঁকির মধ্যে চলছে ক্লাশ 📰আশাশুনিতে উপজেলা শুমারী  কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

আজ প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল আব্দুস সালাম’র ৭৩তম জন্ম বার্ষিকী

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০২২
  • ২৫৮ সংবাদটি পড়া হয়েছে



-মীর জিল্লুর রহমান

মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সৈনিক প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল আব্দুস সালাম ১৯৪৮ সালের ১লা এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলাধীন তালা উপজেলার কৃষ্ণকাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই বীর সেনানী জীবদ্দশায় অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিক হিসেবে সমাজ পরিবর্তনের ও দুর্নীতিমুক্ত আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বিপ্লবী আদর্শের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে কয়েকবার কারা বরণ করেন। ১৯৭১ সালে তালা থানার মুজিব বাহিনীর প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তার নির্দেশনায় কপিলমুনি রাজাকার ঘাঁটি আক্রমণ ও সফলতা অর্জন করেন।
তার আদর্শ ও জীবন আচরণ সকলকে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করবে। ৭১’র অকুতোভয় বীর সেনানী মোড়ল আব্দুস সালাম জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৮ খ্রিঃ ১লা এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলাধীন তালা উপজেলার কৃষ্ণকাটি গ্রামে। তার পিতার নাম হাজী আবুল কাশেম মোড়ল, মাতা আশাফুন্নেছা বেগম। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ছোট বেলায় তার বাবা-মা ও গ্রামবাসি আদর করে তাকে বাঁচা বলে ডাকতো। লেখাপড়ার হাতে খড়ি কৃষ্ণকাটি প্রাইমারী স্কুলে। পরবর্তীতে ভর্তি হন কপিলমুনি সহচারী বিদ্যামন্দিরে। স্কুলে লেখাপড়ার সময় ১৯৬২ সালে ৮ম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলের আন্দোলন ও ধর্মঘট পালনের মধ্যে দিয়েই মূলত তাঁর রাজনীতিতে হাতে খড়ি। তিনি ১৯৬৪ সালে কপিলমুনি সহচারী বিদ্যামন্দিরে ছাত্রদের বিভিন্ন দাবির আন্দোলন, স্কুলের নির্বাচিত ছাত্র মনিটর এবং ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৫ সালে একই স্কুল থেকে ২য় বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন সম্পন্ন করেন। উচ্চ শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে পরবর্তীতে ভর্তি হন বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ দৌলতপুর ব্রজ লাল (বি.এল কলেজ) মহাবিদ্যালয়ে এবং ১৯৬৬ সালে দৌলতপুর কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ সালে কৃতিত্বের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চ শিক্ষা লাভের আশায় পরবর্তীতে বাগেরহাট আচার্য্য প্রফুল্ল্য চন্দ্র মহাবিদ্যালয়ে (পি.সি কলেজ) ¯œাতক ভর্তি হন। সে সময়ে দেশে রাজনীতি তুঙ্গে। তিনিও সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৮-৭০ সালে পর পর দু’বার বাগেরহাট মহাকুমায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৯ সালে ০১ ফেব্রুয়ারি সরকার বিরোধী গণআন্দোলনে ক্যাম্পাস থেকে গ্রেপ্তার হন এবং ০২ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের মুখে সরকার তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। একই বছর তৎকালীন পাকিস্তানের মন্ত্রী খান এ সবুর তার রাজনৈতিক সফরে তালায় এসে পরবর্তীতে কৃষ্ণকাটি হাইস্কুল পরিদর্শণে যান। এই সময় খান এ সবুর তার অঞ্চলে আসায় প্রতিবাদ জানায়। ছাত্রাবস্থায় তিনি ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে মক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং সাতক্ষীরা জেলার তালা ও পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি অঞ্চলে অন্যতম সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। দেশের রাজনৈতিক টানা পোড়নের এক পর্যায়ে ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর জাসদ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের পাশাপাশি ১৯৭৪ সালে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, পিরোজপুর সহ কয়েকটি জেলার গণবাহিনী প্রধান ও সি.ও.সি. এর সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি কয়েকবার কারা বরণ করেন। প্রগতিশীল প্রতিটি আন্দোলনে তিনি ছিলেন সক্রীয়। তার দলের মতাদর্শগত সংগ্রাম পরিচালনায় বাঁধাগ্রস্থ হয়ে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হন এবং বাসদ গঠন করে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সালে সংস্কারপন্থি জাসদের সাথে যুক্ত হন এবং ১৯৮৬-১৯৮৮ মেয়াদে জাসদের খুলনা জেলার সভাপতি ও পরবর্তীতে আমৃত্যু জাসদের (জেএসডি) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মোড়ল আব্দুস সালাম তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনীতির পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন সামাজিক ও ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৯৭ সালে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী ছিলেন। এছাড়াও কেন্দ্রীয় পানি কমিটি ও ভূমি কমিটি পরিচালনায় দক্ষ ভূমিকা পালন করেন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যায় সুপেয় পানির নিশ্চয়তা এবং এতদ্ঞ্চলে জলাবদ্ধতা নিরসন আন্দোলনে কেন্দ্রীয় পানি কমিটির অন্যতম পুরোধা। এছাড়াও খুলনা সাতক্ষীরা অঞ্চলে খাস জমিতে ভূমিহীনদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রাম এবং ভূমিহীন নারী পুরুষদের মাঝে খাস জমি বিতরণের নেতৃত্ব দেন। তিনি তালা উপজেলা ভূমি কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ভূমি কমিটির সহ-সভাপতি হিসাবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন। তালা উপজেলার খাস জমি চিহ্নিতকরণ, ভূমিহীন বাছাই ও তালিকা প্রণয়ন ছিল তারই চিন্তার ফসল। সামাজিক জীবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল আব্দুস সালাম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লাব, ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থেকে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তিনি কানাইদিয়া রথখোলা বালিকা মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু স্মৃতি সংসদের আজীবন সদস্য, কপিলমুনি পাবলিক লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি, কপিলমুনি আঞ্চলিক বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সভাপতি, কপিলমুনি ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, কৃষ্ণকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সহ আরও বহু প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ব্যক্তি জীবনে মোড়ল আব্দুস সালাম এক কন্যা সন্তানের জনক। তিনি ছিলেন সম্পুর্ণ নির্লোভ, খাঁটি বাঙালী, আদর্শ দেশপ্রেমিক, সদালাপী, বিনয়ী, যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞান মনোস্ক। তিনি কখনও সুযোগ সন্ধানী ছিলেন না। মানবতাবাদী ও অসাম্প্রদায়িকতাই ছিল তার ধর্ম। সকলের কাছে প্রিয় এই মানুষটি আমাদের মাঝে নেই। তিনি গত ৫ জুলাই ২০১১ খ্রিঃ মঙ্গলবার না ফেরার দেশে চলে যান। আমরা এ বীর সেনানীর অকাল প্রয়াণে শোকাহত, মর্মাহত। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার চির শান্তি কামনা করি। মৃত্যুর পরে যে সকল প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয় তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ঃ মোড়ল আব্দুস সালাম গণ-গ্রন্থাগার, বিপ্লবী আব্দুস সালাম স্মৃতি পরিষদ, আব্দুস সালাম ফাউন্ডেশন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল আব্দুস সালাম বৃত্তি ও কল্যাণ ট্রাষ্ট, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল আব্দুস সালাম স্মৃতি মিনার পরিষদ, ৬নং তালা সদর ইউনিয়ন পরিষদ ঘোষিত উপজেলার শ্রেষ্ঠ বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে মরণোত্তর স্মারক প্রদান করা হয়, কপিলমুনি বালিকা বিদ্যালয়ের একটি ভবন সালাম চত্ত্বর নামে নামকরণ করা হয়, তালা ব্রীজ ভায়া কপিলমুনি খেয়া ঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি সালাম সড়ক নামে নামকরণ করা হয়।

তিনি বাঙালী জাতীর মুক্তির চেতনায় মুক্তির পথ খোঁজার নতুন তাগিদ অনুভব করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ রদের আন্দোলন সহ ব্রিটিশ বিরোধী জাতীয়তাবাদীর আন্দোলনের ইতিহাসের মধ্যে বাঙালীর গৌরবময় জাতীয়তাবাদীর স্বাধীনতা আন্দোলন সংগ্রামে ধারাবাহিক ইতিহাস অধ্যায়ন ও চর্চার পাশাপাশি সাংগঠনিক কাজ নিরলস ভাবে অব্যাহত রাখেন। তিনি ১৯৭০ খ্রিঃ ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ এবং প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিরুপনে ছাত্রলীগ আহুত কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের ঢাকা বলাকা ভবনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলতে তৎকালীন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক স্বপন কুমার চৌধুরীর প্রস্তাবে সমর্থন দিয়ে নতুন রাজনৈতিক নির্দেশনা খুঁজে পান।
মোড়ল আব্দুস সালাম ১৯৭০ খ্রিঃ ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসকে বাংলাদেশ দিবস হিসাবে পালনের কর্মসূচীতে তৎকালীন পাইকগাছা, আশাশুনি, বড়দল, রাড়–লী, কপিলমুনি, খুলনা সাতক্ষীরার ব্যাপক এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বক্তব্য ও সাংগঠনিক কাজ পরিচালনা করেন। কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নির্দেশনায় ২৬ মার্চ আশাশুনি খড়িহাটির জনসভা বাতিল করে সাতক্ষীরা সদরে পৌছে ছাত্রনেতা মোস্তাফিজুর রহমান, কামরুল, আজিবর, ময়না, জজ ভাই, মাসুদা, কামরুছামা, এনামুল, দেলোয়ার হোসেন দুলু, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, দুই খসরু, কাজল, হাবলু, গোলাম, সুভাষ সরকার, সাইদুর রহমান সহ সাতক্ষীরার ছাত্রনেতাদের প্রয়োজনীয় কাজের প্রস্তুতিকে নির্দেশনা প্রদান করেন। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ২৯ মার্চ সাতক্ষীরার তৎকালীন এসডিও খালেক মাসুদের অফিসের সামনে হাজির হয়ে মোড়ল আব্দুস সালামের নেতৃত্বে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা নামিয়ে তা পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং একই সাথে স্বাধীন বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। গণপরিষদের সদস্য এম.এ গফুর এবং সুবেদার আয়ুব আলী সহ সাতক্ষীরা জেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহায়তায় পাঞ্জাবী খালেদ মাহমুদকে গ্রেপ্তার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মোড়ল আব্দুস সালাম। দেশ মাতৃকা শৃঙ্খল ভান্ডার দুর্বর শপথে বলিয়ান মোড়ল আব্দুস সালামের চেতনায় প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের সৃষ্ট মশাল দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে। স্বাধীন দেশের কর্মযোগ্য পরিচালনায় অর্থের প্রয়োজনে সাতক্ষীরা সহ পাকিস্তান ন্যাশনাল ব্যাংকের অর্থ ও সম্পদ সংগ্রহ করার পরিকল্পনা ১৯৭১ সালে ৮ এপ্রিল সফল অভিযানে অংশগ্রহণ করেন মোড়ল আব্দুস সালাম। সংগৃহীত হয় নগদ এক কোটি বিরাশি লক্ষ টাকা যা ছিল নবগঠিত বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহযোগিতার শুভ সূচনা।
১৯৭০ খ্রিঃ নির্বাচনে ব্যাপক গণসংযোগ এবং সাংগঠনিক কাজের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন যোদ্ধা হিসাবে ভারতের দেরাদুল ক্যাম্প থেকে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৯৭১ খ্রিঃ ১৫ আগস্ট বৃহত্তর খুলনা জেলার মুজিব বাহিনীর প্রধান শেখ কামরুজ্জামান টুকুর নেতৃত্বে ১৬ জন প্রশিক্ষিত এবং ১৯ জন সহযোগী মোট ৩৫ জনের একটি দল নিয়ে ভারতীয় সিমান্ত অতিক্রম করে সাতক্ষীরা জেলার তালা থানার মাগুরায় অবস্থান নিয়ে যুদ্ধ পরিচালনার ঘাটি গড়ে তোলেন মোড়ল আব্দুস সালাম। এরপর শুরু করেন স্থানীয় মানুষের মধ্যে ট্রেনিং প্রদানের কাজ এবং পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোষর শত্রু ঘাটি আক্রমনের পরিকল্পনা। প্রস্তুতি পূর্বে প্রাথমিক আক্রমন পরিচালনায় পাইকগাছা বড়দল, বারহাড়িয়া সফলতা অর্জিত হয়। এরপর পাটকেলঘাটা ও কপিলমুনি রাজাকার ঘাটির বিরুদ্ধে কোনটি আগে পরিচালিত হবে সেই প্রশ্নে মোড়ল আব্দুস সালাম সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার নির্দেশনায় কপিলমুনি রাজাকার ঘাঁটি আক্রমণ ও সফলতা অর্জন করেন। ৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার এই যুদ্ধ সম্পর্কে মোড়ল আব্দুস সালাম লিখেছেন, তার জীবনে নৌপথ ও সামুদ্রিক গেরিলা যুদ্ধ খুলনা/কপিলমুনি যুদ্ধই শেষ যুদ্ধ। কপিলমুনি রাজাকার ঘাটির তালিকা মতে এক হাজার ছয়শত এক জন মানুষকে হত্যা করে। কপিলমুনি যুদ্ধে বিজয় অর্জিত হবার পর গণ আদালতের রায়ে বন্দী ১৫৫ জন রাজাকারের মধ্যে ১৫১ জনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়। এদিকে নৌপথ ও সামুদ্রিক গেরিলা যুদ্ধে খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাট অঞ্চলে নৌকমান্ডার লে. মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ (দাদু) (বীর প্রতীক) এর নেতৃত্বে মুজিব বাহিনীর প্রধান বৃহত্তর খুলনা কমান্ডো শেখ কামরুজ্জামান টুকু, স. ম বাবর আলী, ইউনুস আলী ইনু, আবুল কালাম আজাদ, গাজী মোঃ রফিক, মোড়ল আব্দুস সালাম, স. ম আলাউদ্দীন, ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, নৌকমান্ডো বজলুর রহমান, সামসের আলী, শফিক আহম্মেদ, ড. মাহফুজুর রহমান, মেজর সামছুল আরেফিন, সাইদুর রহমান কুটু, নুরুল ইসলাম মানিক, কে.এ.ম মুজিবর রহমান, শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু সহ হাজারও মুক্তিযোদ্ধা কপিলমুনি যুদ্ধের পর পর্যায়ক্রমে ১৬ ডিসেম্বর খুলনার বিজয় অর্জনে মোড়ল আব্দুস সালাম একজন নিবেদিত প্রাণ ও সংগঠক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের প্রশ্নে মোড়ল আব্দুস সালাম এর বক্তব্য ছিল যে, মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধে লিপ্ত ছিল, সার্টিফেকেট অর্জনের জন্য নয়। সার্টিফিকেট দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভূক্ত হতে হবে এমন ভাবনা তাদের ছিল না। তাই অনেক মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট না থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই বলে কি সে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্ত হবে না?
তিনি আরো বলেন, আমরা ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে দেশে ফিরে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় যুবকদের ট্রেনিং দিয়েছি। যেমন- সাতক্ষীরার মহাকুমার তালা থানার ভাতুয়াডাঙ্গায় মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছিল।

#

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2024
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd