প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করবেন ১৪ দলের নেতারা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে ১৪ দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে জোটনেত্রী শেখা হাসিনার বৈঠকে বসা হয়নি। তাই জোট নেতারা এই বৈঠকে আগামী দিনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রয়োজনে জোটনেত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শ ও মতামত গ্রহণ করবেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
জোটের নেতারা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল ও নেতাদের সক্রিয় করতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কারণ করোনায় ১৪ দলের নেতাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম ভাটা পড়ে আছে। ভেতরে ভেতরে মনোমালিন্যও সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠেয় গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকে ১৪ দলীয় জোটের শরিক নেতারা ছাড়াও আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত থাকবেন। ইতোমধ্যে জোট নেতাদের আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে। বৈঠকে রাজনৈতিক, সামাজিক, নির্বাচন নানা বিষয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি রাজনীতির মাঠে বিরোধীদের আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবিলায় ১৪ দলীয় জোটের ভূমিকা কী হবে- সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে কর্মকৌশল চূড়ান্তসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। রাজনৈতিক পারিপার্শ্বিক অবস্থা, বিরোধীদের আন্দোলন-সংগ্রাম ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়েও ১৪ দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হতে পারে। বর্তমান বাস্তবতা বা প্রেক্ষাপটে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আগামীকাল ১৪ দলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকে আমিও থাকবো। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের আদর্শিক’ এই জোটের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ। তাই ১৪ দল ভাঙনের কোনো কারণ নেই। ১৪ দলের সঙ্গে ঐক্য এখনো অটুট আছে এবং থাকবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হবে। তবে কী কী বিষয় কথা হবে সেটা নিদিষ্ট করে বলা যাবে না।
দীর্ঘদিন ধরে ১৪ দলের নেতাকর্মীরা নিষ্ক্রিয় এই বিষয় আপনাদের কোনো মতামত তুলে ধরবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশা করি সব বিষয় নিয়ে কথা হবে। তবে এখন কিছু বলা সম্ভব না।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হবে। এর বেশি কিছু আমি জানি না।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জোটগতভাবে আসন ভাগাভাগি করে নির্বাচনে অংশ নেয় জোটের শরিকরা। নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে শরিকদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। তবে সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারের মন্ত্রিসভায় শরিক দলের কাউকে রাখা হয়নি। এরপর থেকেই নানা কারণে জোট শরিকদের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে। জোটের বৈঠক, দলের (শরিক দলসমূহ) বিবৃতি-বক্তৃতা এমনকি জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
যদিও ‘মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের আদর্শিক’ এই জোটের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের সব সময় দাবি ১৪ দলের ঐক্য এখনো অটুট আছে।
Leave a Reply