ন্যাশনাল ডেস্ক: সরকারের শতবর্ষী ডেলটা প্লান ২১০০ বাস্তবায়নে প্রতিবছর প্রয়োজন হবে মোট দেশজ আয়ের দুই শতাংশ। কিন্তু কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকার বরাদ্দ দিচ্ছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। বাকি ১ দশমিক ২ শতাংশ কোন উৎস্য থেকে আসবে তা নিশ্চিত করা যায়নি।
কাজটি কঠিন হবে বলে মনে করেন সরকার সংশ্লিষ্টরা। তারা আরও মনে করেন, অতিরিক্ত অর্থ সংস্থানে সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং ডেলটা প্লান ২১০০-এর সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের বিষয়ে যে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে তার সঙ্গে কিছু সৃজনশীল প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে। সরকারের শতবর্ষী ডেলটা প্লানে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
‘বিনিয়োগ ব্যয় পুনরুদ্ধার’ নীতিতে জোর দেওয়া হচ্ছে
শতবর্ষী ডেলটা প্লানে বলা হয়েছে, এর বিভিন্ন কল্পদৃশ্যে বর্ণিত জাতীয় উন্নয়ন কৌশলের বিপরীতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ সামগ্রিক সরকারি বিনিয়োগ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। কর বাবদ পাওয়া অর্থ ও সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে আহরিত অর্থ এবং গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডসহ বৈদেশিক অর্থায়নের সমন্বয়ে সরকারি তহবিলের যোগান কৌশল নির্ধারিত হয়েছে।
জানা গেছে, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগে সুবিধাভোগীদের নিকট থেকে অর্থ আদায়ের মাধ্যমে ‘বিনিয়োগ ব্যয় পুনরুদ্ধার’ নীতি প্রয়োগে জোর দেওয়া হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে, ডাচ ডেলটার কথা বলা হয়। যাতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ, পানি সরবরাহ পয়ঃনিষ্কাশন, এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ নীতির মাধ্যমে অর্থায়ন করা হয়।
ব্যয় পুনরুদ্ধার নীতি অনুসরণ করে এ সকল খাতে বিনিয়োগ ও রক্ষণাবেক্ষণের সম্পূর্ণ অর্থায়ন হওয়ার পাশাপাশি সেখানকার পানি ব্যাবস্থাপনাও অধিকতর বিকেন্দ্রিকৃত করা হয়েছে। ডাচদের পানিসম্পদ খাতে বিনিয়োগের ৮০ শতাংশ ব্যয়সহ রক্ষণাবেক্ষণের শতভাগ ব্যয় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এ অর্থের বেশিরভাগ অংশ স্থানীয় পানি ব্যবস্থাপনা সংগঠনগুলো দেয়।
পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে পানি ব্যবস্থাপনা সংগঠনগুলো অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রয়োজনে ভর্তুকি প্রদান করে এবং সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ আদায়ের মাধ্যমে বিনিয়োগ ব্যয় পুনরুদ্ধার নীতির বাস্তবায়নে বেসরকারি সমবায় সমিতি হিসেবে কাজ করে।
বাংলাদেশে ব-দ্বীপ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও অনুরূপ নীতি প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের শহর এলাকায় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা সংক্রান্ত রক্ষাণাবেক্ষণ কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সুবিধাভোগীদের নিকট থেকে অর্থ আদায়ের মাধ্যমে বিনিয়োগ ব্যয় পুনরুদ্ধারের প্রচলন নেই।
এ ছাড়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় পুনরুদ্ধারও অতি নগণ্য। গতানুগতিকভাবে নগরে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন, এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নিয়োগ করা মূলধন পুনরুদ্ধারেরও প্রচলন নেই। বন্যা ব্যবস্থাপনা এবং সেচের ক্ষেত্রেও এ সকল ব্যয় পুনরুদ্ধার করা যায় না। এ ক্ষেত্রে পানি ব্যবস্থাপনা সংগঠনগুলোর অনুপস্থিতি একটি বড় কারণ বলে ডেলটা প্লান সারসংক্ষেপে উল্লেখ করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
Leave a Reply