আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টানা তৃতীয় রাতের মতো জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের ওপর তা-ব চালিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। এরপরেও সেখানে নতুন করে সহিংসতা আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার জেরুজালেমে মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে ইহুদি জাতীয়তাবাদীরা। ফলে এই মিছিল ঘিরে আরও সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপন নিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। জেরুজালেম থেকে নতুন করে ফিলিস্তিনিদের তাড়ানো হবে বলে আশঙ্কা ছড়ানোর পর এই উত্তেজনা শুরু হয়। পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবার অর্থাৎ জুমাতুল বিদা উপলক্ষে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে জড়ো হলে তাদের ওপর অভিযান চালায় ইসরায়েলি পুলিশ। পরদিন পবিত্র শবে কদরের রাতেও তাদের উপর তা-ব চালানো হয়। এতে শত শত ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।
সোমবার বার্ষিক জেরুজালেম দিবস উপলক্ষে পতাকা মিছিলের আয়োজন করেছে ইহুদি জাতীয়তাবাদীরা। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখলের স্মরণে এই দিবস পালন করা হয়। এই দিনে সাধারণত তরুণ জায়নবাদী ইহুদিরা মুসলিম এলাকাগুলোতে মিছিল নিয়ে প্রদক্ষিণ করে। ফিলিস্তিনিরা একে নির্বিচারি উস্কানি হিসেবে দেখে থাকে।
ইসরায়েলের সাবেক এক উর্ধ্বতন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা আমোস গিলাড এই বছরের মিছিল বাতিল কিংবা ভিন্ন পথ অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন। রেডিও আর্মিকে তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরকের বাক্স জ্বলছে, এটি যেকোনও সময় বিস্ফোরিত হতে পারে।’
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর থেকেই পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে ইসরায়েল। পেশীশক্তির জোরে পুরো শহরকে তারা নিজেদের রাজধানী দাবি করলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাতে স্বীকৃতি দেয়নি। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা চায়, পূর্ব জেরুজালেম হবে তাদের ভবিষ্যৎ স্বাধীন দেশের রাজধানী।
পূর্ব জেরুজালেমে নিজেদের বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপনের প্রচেষ্টাকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়। যে কোনও ধরনের উচ্ছেদ কর্মকা- বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিক্ষোভকারীদের প্রতি সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখানোরও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। ফিলিস্তিনিদের বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার যে কোনও উদ্যোগের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আরব লিগ।
Leave a Reply