নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের কথিত নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে সাংবাদিকদের আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত তৈরীকৃত খসড়া ভোটার তালিকা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বাধীন কমিটি। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের হলরুমে সাংবাদিকদের চলমান আন্দোলনের কর্মসূচী হিসাবে আলোচনাসভা চলাকালে এ ধরনের একটি বার্তা পৌছে দেওয়া হয়। এই বার্তার সারকথায় এসে প্রেসক্লাবের সচিব মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, তৈরীকৃত খসড়া ভোটার তালিকা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে আলোচনার ভিত্তিতে অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে খসড়া ভোটার তালিকা স্থগিতের ঘটনায় সাংবাদিকরা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এটা তাদের আন্দোলনের ফসল। পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে কথিত নির্বাচনী প্রক্রিয়া বন্ধ না করা পর্যন্ত সাংবাদিকদের আন্দোলন অব্যহত থাকবে। তবে প্রেসক্লাবের বাইরের যেকোন আন্দোলন স্থগিত রেখে প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরে আন্দোলন চালিয়ে যাবার আহবান জানানো হয়।
আগেরদিনের ঘোষনা অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাব সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এই সভার সঞ্চালনায় ছিলেন প্রেসক্লাব সাধারন সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ আবু আহমেদ বলেন, যেহেতু পুলিশ সুপারের নেতৃত্বাধীন কমিটি খসড়া ভোটার তালিকা সাময়িক স্থগিত করেছে সেজন্য আমরাও আমাদের আন্দোলন প্রেসক্লাবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাই। প্রেসক্লাবের এই কথিত নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্থগিত না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে নতুন কেউ সদস্যপদ চাইলে তাকে গঠনতান্ত্রিকভাবে আবেদন করতে হবে। সে অনুযায়ী তা নিষ্পত্তি করা হবে। অন্য কারো হাতে তৈরী সদস্যপদ প্রেসক্লাব গ্রহন করতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী দিনগুলিতেও সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ থেকে তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
সাধারন সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। আমাদের লক্ষ্যে পৌছাতে হলে ঘরেবাইরে আন্দোলন করতে হবে। তবে আপাতত আন্দোলন প্রেসক্লাবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রেসক্লাব গঠিত এ্যাকশন কমিটির আহবায়ক কল্যান ব্যানার্জী বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করবেন না। তিনি বলেন, বাইরের কিছু লোক আমাদের আন্দোলনকে বাঁধাগ্রস্থ করতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছেন। তাদেরকে হুশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেন, যত চেষ্টাই হোক আমরা যে আন্দোলনে নেমেছি তার চূড়ান্ত ফসল ঘরে তুলবো।
এ্যাকশন কমিটির সদস্যসচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, কোনভাবে চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে না। সম্মিলিতভাবে প্রেসক্লাব সদস্যরা যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন করানোর দায়িত্ব প্রেসক্লাবের। প্রেসক্লাবই সে ব্যবস্থা নেবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে আলাপ আলোচনা ও সমঝোতা হতে পারে। প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী বলেন, পুলিশ সুপারের নেতৃত্বাধীন কমিটি তৈরীকৃত খসড়া ভোটার তালিকা স্থগিত করানোর মধ্য দিয়ে আমাদের প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে। তবে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সরে না যাওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যহত থাকবে। এ্যাকশন কমিটির সদস্য রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, আমরা আন্দোলন অব্যহত রাখতে চাই। তবে সে আন্দোলন হবে প্রেসক্লাবের ভেতরে। প্রয়োজনে বাইরেও আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া হবে। আমরা এক ও অভিন্ন পথে আন্দোলন চালিয়ে যাবো। প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক এম কামরুজ্জামান বলেন, আমরা আন্দোলনের ফসল হিসাবে কিছুটা অর্জন পেয়েছি। এই অর্জনকে ধরে রেখে চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচী অব্যহত রাখতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সেলিম রেজা মুকুল, কাজী শওকত হোসেন ময়না, ইয়ারব হোসেন সহ অন্যান্য সাংবাদিকবৃন্দ।
Leave a Reply