নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ কলারোয়ার দেয়াড়া ইউনিয়নের মাঠপাড়া গ্রামের কৃষক আমজেদ গাজী হত্যার ঘটনায় থানায় দেওয়া এজাহারে জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। এজাহারে যেসব কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা অনেকাংশে অসত্য। কলারোয়া থানার এসআই সোহরাব হোসেন আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এই এজাহারে সই করিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে একথা জানান, নিহত আমজেদ গাজীর ছেলে সুমন হোসেন। এসময় তার পরিবারের সদস্য লাভলু গাজী, শফিকুল ইসলাম, সোহেল রানা, ইকরাম হোসেন, জনাব আলী, সাত্তার গাজী, নূরজাহান, হালিমা, হাসিনা, ফাতেমা, আক্তার সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে সুমন হোসেন বলেন, গত ১২ জানুয়ারি তার বাবা আমজেদ গাজী মামলাভূক্ত জমিতে চাষ করার জন্য গেলে তাতে বাধা দেন তার চাচা আনসার গাজী ও তার লোকজন। এসময় আনসার ও তার লোকজনের হামলায় অনেকেই আহত হন। এক পর্যায়ে আনসার গাজীর বাঁশের লাঠির আঘাতে ঘটনাস্থলেই তার বাবা আমজেদ গাজী মারা যান। সুমন হোসেন বলেন, এ ঘটনায় মামলা করার জন্য তিনি কলারোয়া থানায় যান। তাকে সেখানে ৩-৪ ঘন্টা বসিয়ে রাখা হয়। পরে রাতে এসআই সোহরাব একটি এজাহার প্রস্তুত করে তাকে স্বাক্ষর করতে বললে তিনি তা পড়ে জানতে পারেন এজাহারে সঠিক তথ্য নেই এবং ইন্ধনদাতা আলমগীর ও লতিফ দফাদারের নামও নেই তাতে। এর প্রতিবাদ করায় দারোগা তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘বেশী বুঝলে সমস্যা আছে। আর যদি সই না করিস তবে তোকেও ঝুলিয়ে দেবো। আমার নাম সোহরাব দারোগা’।
সুমন হোসেন আরও বলেন, দারোগার ভয়ে আমি সই করতে বাধ্য হই। পরে আমি এ বিষয়টি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানাই। পরদিন দারোগা সোহরাব সুমন হোসেনকে ফের ডেকে তার বাসায় দেখা করতে বলেন। বাসায় দেখা করতে গেলে তিনি তেলেবেগুনে জ¦লে উঠে বলেন, ‘তুই একা আসবি, আবার এসব দালাল সাথে এনেছিস কেন?। সুমন হোসেন বলেন, এরা সবাই আমার সাক্ষী। দারোগা তার জবাবে বলেন, ‘বেশী বাড়াবাড়ি করলে সবকটাকে একসাথে ঝুলিয়ে দেবো। কারন তোদের স্থানীয় নেতাগোতা, ওসি ও এসপির নির্দেশেই সব করেছি’ । সুমন হোসেন বলেন, বাবাকে হারিয়ে পুলিশের এই নিষ্ঠুর আচরনের মুখে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। তিনি ওই এজাহার পরিবর্তন করে নতুন করে এজাহার লেখার দাবি জানিয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার আইজিপির দৃষ্টি আকর্ষন করেন। সংবাদ সম্মেলনে সুমন হোসেন আরও বলেন, হত্যাকারী আনসার ও তার লোকজন এখন বলে বেড়াচ্ছে, ‘দেখি মামলা করে কি করিস, তোদের পুরো পরিবারের ঘরবাড়ি জ¦ালিয়ে দেবো।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক সোহরাব হোসেন জানান, ঘটনার বাস্তবতার প্রেক্ষিতে এজাহারটি লেখা হয়েছে। এটি একটি হত্যাকান্ড উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করার ঘটনা সত্য নয়। তবে আমজেদ গাজীর ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা করেছিল। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আনসার গাজী সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Leave a Reply