ন্যাশনাল ডেস্ক: যৌন সহিংসতা বন্ধে কিশোর-কিশোরী ও যুবদের প্রজননস্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়ে শিক্ষা সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার ‘যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে জাতীয় শিক্ষাক্রমে যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য এবং অধিকার শিক্ষা অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক ওই ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর।
বক্তৃতা করেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)’র সদস্য (কারিকুলাম) প্রফেসর মশিউজ্জামান, পিএসটিসি’র নির্বাহী পরিচালক ড. নূর মোহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপ্যুলেশন সাইন্সেস বিভাগের চেয়ারপারসন ড. মোহাম্মদ মাঈনুল হোসেন, স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সামিনা চৌধুরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, এফপিএবি’র পরিচালক ডা. সঞ্জীব আহমেদ, সাংবাদিক নীলিমা জাহান, বিএনপিএস’র উপপরিচালক মুজিব মেহদী, জাতিসংঘের কমিউনিকেশন বিভাগের ফোকাল তানজিম সোহরাব, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার (জেন্ডার অ্যান্ড এসআরএইচআর) মাশফিকা জামান সাটিয়ার, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে জেন্ডার সংবেদনশীল করার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ চলছে। সরকারের এ বিষয়ে শিক্ষাপ্রদানে সর্বোচ্চ সদিচ্ছা রয়েছে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কারিকুলাম রিভিউ করার কাজে যারা যুক্ত তাদের সকলকে জেন্ডার সংবেদনশীলতা বিষয়ে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। আগামী ২০২১ সালের নতুন পাঠক্রমে এর প্রতিফলন ঘটবে।
ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য এবং অধিকার (এসআরএইচআর) শিক্ষা বিষয়ে সকলে নীতিগতভাবে একমত। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার আছে, এসডিজিতেও নির্দেশনা আছে। তাছাড়া বিভিন্ন নীতি, কৌশল ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা রয়েছে। এগুলোকে সমন্বয় করতে হবে।
ড. মাঈনূল ইসলাম বলেন, এসআরএইচআর শিক্ষা হওয়া উচিত বয়সভিত্তিক। কোন বয়সের জন্য কোন শিক্ষাটা উপযোগী সেটা নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী পাঠ নির্ধারণ করতে হবে। তাছাড়া এই শিক্ষার উদ্দেশ্য কী হবে সেটাও নির্ধারণ করতে হবে। এ সংক্রান্ত কার্যক্রম নিয়মিত মনিটর করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, যারা পারিবারিক-সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়কে নারীর প্রতি সহিংসতার কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান, তাদের ধারণা ত্রুটিপূর্ণ। কারণ আমাদের মূল্যবোধের মধ্যেই অনেক নারীবিরোধী উপাদান রয়েছে, যা নারীর প্রতি বৈষম্য ও নির্যাতনকে জোরদার করে। তাই নতুন মূল্যবোধ তৈরির জন্য কাজ করা দরকার, যেখানে সবাই সবার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। শিক্ষাব্যবস্থা সে কাজটা করতে পারে বলে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
Leave a Reply