নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতির অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে ২০১৬-২০১৯ মেয়াদ কালের সভাপতি কামরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী ও অর্থ সম্পাদক নিজাম উদ্দীনের বিরুদ্ধে। আত্মসাৎকৃত অর্ধ কোটিরও বেশি টাকা উদ্ধার প্রসঙ্গে গত ৭ অক্টোবর ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ শেয়ার সদস্যবৃন্দ সাতক্ষীরা জেলা সমবায় কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতি লিঃ রেজিঃ নং- ৮৬/ সাত ২০০৯ এর সাবেক ২০১৬-২০১৯ সালের কার্যকরী কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও বহুদিন সমিতির আয়ব্যয়ের হিসাব সাধারণ সদস্যদের মাঝে উপস্থাপন না করায় ওই কমিটির দ্বায়িত্বে থাকা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অর্থ সম্পাদকে শেয়ার সদস্যরা হিসেব দিতে চাপ প্রয়োগ করে। চাপের মুখে পড়ে সেসময় সাধারণ সভার আয়োজন করেছিল, ওই সভায় তারা একটি মনগড়া হিসাব উপস্থাপন করে। সেই হিসাবের বিপরীতে সমিতির সদস্যরা প্রশ্ন করলে তারা প্রশ্নের জবাব দিতে ব্যার্থ হয়। এক পর্যায়ে সাধারণ সভা শেষ না করেই কৌশলে সভাস্থল ত্যাগ করেন তারা। ফলে সমিতির হিসাব নিকাশ অমিমাংসিত থেকে যায় এবং প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব শুন্য হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে জেলা সমবায় কতৃক একটি আদেশের মাধ্যমে মোঃ ফিরোজ হোসেন কে সভাপতি করে ১২০ দিন মেয়াদে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি অন্তর্বতীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির ঘোষণা দেয়াহয়। ওই আদেশ পত্রের অনুলিপির ৬নং কলামে সাবেক সভাপতি মোঃ কামরুল ইসলাম কে আদেশ পত্র প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে অন্তর্বতীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে সমিতির দ্বায়িত্ব ও হিসাব নিকাশ হস্তান্তরের জন্য বলা হলেও সে বিষয়ে কোনো প্রকার কর্ণপাত করেনি তিনি। পরবর্তীতে বিষয়টি পত্রের মাধ্যমে জেলা সমবায় কর্মকর্তা কে জানানো হয়েছিল। ওই পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির ১২০ দিন মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে পুনরায় জেলা সমবায় তিন সদস্য বিশিষ্ট আরও একটি কমিটি গঠন করে। যার সভাপতি ছিলেন, উপজেলা সমবায়ের কর্মকর্তা খান তৈয়েবুর রহমান। তিনিও সাবেক সভাপতি কামরুলের কাছ থেকে হিসাব নিতে ব্যর্থ হন। পরপর দুটি কমিটির আদেশ পত্র পেয়েও পুরো হিসাব দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতি ধামাচাপা দিয়ে আবারো ক্ষমতায় পূর্নবহাল হওয়ার জন্য আত্মসাৎকৃত অর্থ দিয়ে অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে আসছেন তারা বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই লিখিত অভিযোগে।
এব্যাপারে ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতির একাধিক সাধারণ শেয়ার সদস্যরা অভিযোগ করে বলেছেন, সাবেক সভাপতি কামরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী ও অর্থ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন তাদের ৩৬ মাস মেয়াদ কালে সমিতির ৮৮ জন নতুন সদস্য নিয়োগের অর্থ সহ বিভিন্ন খাত থেকে আয় ও ব্যয়ের হিসেব অনুযায়ী তাদের কাছে সমিতির পঞ্চান্ন লক্ষের ও বেশি টাকা রয়েছে। তারা এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করার পায়তারা করছে।
আজিজুল ইসলাম, মাসুম বিল্লাহ সাব্বির, শাহিনুর রহমান শাহীন, ফরহাদ হোসেন সহ আরও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ওই কার্যকরী কমিটি আামাদের ৪০-৫০ জনের কাছ থেকে নির্ধারিত ভর্তি ফি নিয়েও সমিতিতে অন্তর্ভুক্ত না করে তালবাহানা শুরু করছে। যারা সদস্য পদ পেতে তাদের চাপ প্রয়োগ করছে তাদের ভুয়া পরিচয় পত্র দিয়েছে তারা।
ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠা কালীন শেয়ার সদস্য মোঃ সামছুরজ্জামান বলেন, সাবেক পরিষদের আত্মসাৎকৃত অর্ধ কোটিরও বেশি টাকা পুনঃউদ্ধরের হলে প্রতিষ্ঠানটি আবারও প্রাণ ফিরে পাবে। আত্মসাৎকৃত বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা ও করেছেন তিনি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা সমবায় কর্মকর্তা খন্দকার মনিরুল ইসলাম বলেন, টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনায় ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতির সদস্যরা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তদন্ত কাজ চলছে। খুব দ্রুতই তদন্ত রিপোর্ট হাতে আসবে। তদন্ত শেষ হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply