আশাশুনি ব্যুরো ঃ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জাল কাগজপত্র প্রদর্শন করে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স গ্রহন ও এলাকার অসহায় মানুষদের সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত করে আত্মসাতের প্রতিকার প্রার্থনা করে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
শুভদ্রাকাঠি গ্রামের সোহরাব হোসেন, প্রতাপনগর গ্রামের হেলাল উজ্জামান, আব্দুস সামাদ মহলদার, মাহামুদুল হাসান মিলন, জিয়াউর রহমান, কুড়িকাহনিয়ার নূরে আলম বাদী হয়ে দুদক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য ও জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন বিগত ৯ বছর এলজিএসপি, কাবিখা, কাবিটা, কর্মসৃজন কর্মসূচি. জিআর ও আন্তঃ খেয়াঘাটের ১% টাকাসহ বিভিন্ন ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে কোটি কোটি আত্মসাৎ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত মোবাইলের মাধ্যমে ২৫০০ করে টাকা প্রাপকের নাম, পিতার নাম ঠিক রেখে অনেকের স্থলে নিজের লোকদের মোবাইল নং দিয়ে টাকা আত্মসাৎ, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধি ভাতার নতুন বইয়ের সকল পাতা ছিড়ে ফেলে ৭ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর থেকে সরকারি বরাদ্দকৃত ত্রাণের চাউল, নগদ টাকা, ঢেউটিন, শুকনা খাবারসহ অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী এবং বাঁধ রক্ষার কাজের শ্রমিকদের মজুরী (চাউল) না দিয়ে সিংহ ভাগ আত্মসাৎ করেছেন। ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকায় ফলাও করে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া করোনার জন্য সরকাারি সহায়তা ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা নিয়ে স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও আত্মসাতের ঘটনার অভিযোগ রয়েছে। গ্রাম পুলিশ ইব্রাহিমের পরিবারের ৯জনকে, ৯নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বারের স্বামী আমিরুল ও ছেলে শাহজালালকে, পোষ্ট মাস্টার আসাদুল সেখ, তার ভাই পুলিশে কর্মরত রবিউলের মা ও স্ত্রীকে, ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত আসমাউল হুসনা ও তার বোনসহ অগণিত মানুষকে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এমনকি রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন এনজিও’র সহায়তার তালিকায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তাদের নাম দেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়মকে তুয়াক্কা না করে তিনি ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতাপনগর মাদরাসার অবৈধ কমিটির বিরুদ্ধে আদালতে ১১৮/১৭ নং মামলা বিচারাধীন থাকলেও তিনি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বোর্ড গঠনের পায়তারা চালাচ্ছেন উল্লেখ করে অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান জাল আয়কর জমার রশিদ দেখিয়ে ২টি আগ্নেয়াস্ত্র গ্রহন করেছেন। বিদ্যুতের মিটার করিয়ে দেওয়ার নামে ক্যাডার মুকুল হোসেনের মাধ্যমে এলাকা থেকে প্রতি জনের নিকট থেকে ২৩০০ টাকা করে ৪০/৫০ লক্ষ টাকা এবং ভিজিডি কার্ডধারী ৩৮৫ জনের নিকট থেকে ২০০ টাকা করে একাউন্টে জামা রাখা হবে বলে ২৫০ টাকা করে কেটে রাখা হয়েছে। অতিঃ ৫০ টাকা ফেরৎ দেওয়া হয়নি এবং একাউন্টেও টাকা জমা হয়নি বলে অভিযোগ করে তারা আরও বলেন, সুশীলনের প্রকল্পের আওতায় মৎস্য ঘের নাই এমন ব্যক্তি আসমাউল হুসনা, আমজাদ মেকানিক, মজিদ শেখ, শাহ আলমসহ ৫০ জনের তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। যাদেরকে ৫০০০ টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে। এমনকি ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতকারী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবী জানান হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সকল ত্রাণ ও সহায়তা যথাযথ ভাবে ডিসি মহোদয়ের তদারকিতে এবং ইউএনও প্রতিনিধি ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে বিতরণ করা হয়েছে। কোন অনিয়ম দুর্নীতি করা হয়নি। সকল বরাদ্দ যথা নিয়মে বিতরণ ও কাজে লাগান হয়েছে। কোন আত্মসাতের সামান্যতম ঘটনা ঘটেনি। বরং বাঁধ রক্ষাসহ অসহায় মানুষের পাশে থেকে ব্যক্তিগত তহবিল হতে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছি। হিংসাত্মক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন।
Leave a Reply