ক্রিড়া ডেস্ক: মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে অচল বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন। একে একে স্থগিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের অনেক সিরিজ। এখনও পর্যন্ত পাঁচটি সিরিজ স্থগিত হয়ে গেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের। যার মধ্যে চারটিতেই ছিল আইসিসি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ। যেখানে রয়েছে মোট ৮টি ম্যাচ। এ ম্যাচগুলোর পুনঃ সূচির জন্য আইসিসির দ্বারস্থ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আইসিসি যদি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সময় না বাড়ায়, তবে নির্ধারিত সময়সীমায় নিজেদের স্থগিত হওয়া টেস্টগুলো খেলতে পারবে না বাংলাদেশ। এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
এ প্রসঙ্গে বিসিবির পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খান ক্রিকেটবিষয়ক এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আইসিসি বর্তমান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সময় বাড়ানো ছাড়া আমরা নির্ধারিত সময়সীমায় এই আটটি টেস্ট খেলতে পারব না। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে আইসিসি কী করে আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি। এটা করা ছাড়া আমাদের স্থগিত হওয়া আটটি টেস্ট খেলা কঠিন হয়ে যাবে।’
একই কথা বলেছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। তার মতে, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল যদি সূচি মোতাবেক আগামী জুনেই হয়, তাহলে এসব ম্যাচের ভাগ্য সুতায় ঝুলে যাবে। কারণ পরবর্তী জুনের মধ্যে এসব ম্যাচ খেলার মতো সময় আমরা পাব না। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সময় বাড়লে হয়তো সুযোগ পাওয়া যেতে পারে।’
করোনার কারণে বাংলাদেশের সর্বশেষ শ্রীলংকা সফর বাতিল হয়। এর ফলে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মোট আটটি টেস্ট স্থগিত হলো। পাকিস্তানের বিপক্ষে করাচিতে এক টেস্ট, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুটি করে টেস্ট এবং শ্রীলংকা সফরে তিন টেস্ট- এই ৮ টেস্ট স্থগিত হয়েছে বাংলাদেশের। এছাড়া আয়ারল্যান্ড-ইংল্যান্ড সফরও স্থগিত হয়েছে করোনায়।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজগুলো নিয়ে তেমন বাধ্যবাধকতা নেই। খেলা যাবে যেকোনো সময়। কিন্তু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচগুলো শেষ করতে হবে দুই বছরের সময়সীমার মধ্যেই। কিন্তু বিসিবি মনে করছে ৮টি ম্যাচ পিছিয়ে যাওয়ায়, সেগুলো বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে আয়োজন করা সম্ভব হবে না।
বিসিবির চাওয়া আইসিসি যেন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সময়সীমা আরও বর্ধিত করে, যাতে করোনায় স্থগিত ম্যাচগুলোর সব ক’টি ম্যাচ খেলতে পারে বাংলাদেশ। অন্যথায় পুরো ৮ ম্যাচের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে না। বর্তমান সূচিতে আগামী জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচের সময় নির্ধারিত রয়েছে।
২২ বছর আগে ইউনাইটেড ক্রিকেট বোর্ড দক্ষিণ আফ্রিকার সুপ্রিমো আলী বাশের, ক্লাইভ লয়েড ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক প্রধান নির্বাহী আইসিসির কাছে টেস্ট বিশ্বকাপের প্রস্তাব করে। পরবর্তীতে আরও অনেক ধারণা আসে। অবশেষে ২০১৯ সালের ১ আগস্ট আইসিসি ২ বছরব্যাপী প্রথমবারের মতো বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করে। যেটি এজবাস্টনে অ্যাশেজের মাধ্যমে শুরু হয়।
এই চ্যাম্পিয়নশিপের অধীনে শীর্ষ ৯টি টেস্ট খেলুড়ে দেশ দুই বছরে একে অপরের বিপক্ষে লড়বে। প্রতিটি দেশই এই সময়ে ৬টি টেস্ট সিরিজ খেলবে। যেখানে তিনটি দেশে ও তিনটি দেশের বাইরে। আর সবমিলিয়ে হবে ২৭টি সিরিজ, যেখানে ৭১টি ম্যাচের ব্যবস্থা থাকবে। এখান থেকে শীর্ষ দুই পয়েন্ট অর্জনকারী দেশ ফাইনাল খেলবে। যা ২০২১ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
Leave a Reply