গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট কিট’ অ্যান্টিবডিও চিনতে পারছে না। অ্যান্টিবডি শনাক্তে তাদের কিটের সেনসিটিভি গ্রহণযোগ্য মাত্রার নিচে থাকায় রেজিস্ট্রেশনের অনুমোদন দেয়নি ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন না দেওয়ার বিষয়টি চিঠি দিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১৭ জুন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট কিট অ্যান্টিবডি চিনতে পারলেও সংক্রমণের প্রথমভাগে করোনা ভাইরাস শনাক্তে ‘কার্যকর নয়’ বলে প্রতিবেদন দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মূল্যায়ন কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র অ্যান্টিবডি শনাক্তের অনুমোদন চেয়েছিল। কিন্তু ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি মূল্যায়ন করে দেখেছে, অ্যান্টিবডি শনাক্তে ন্যূনতম সেনসিটিভিটি ঐ কিটে নেই।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংকটের শুরুর দিকে যখন কিটের সংকট প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছিল, তখনই দেশীয় প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষে কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তে কিট উদ্ভাবনের খবর দেন অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল। এরপর চীন থেকে কাঁচামাল (রি-এজেন্ট) এনে কিটের স্যাম্পল তৈরির কাজ শুরু করেন তারা। গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের এই জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট কিট দিয়ে ৫ মিনিটে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে, খরচ হবে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুরু থেকেই বলে আসছে, এ ধরনের র্যাপিড কিটে পরীক্ষার ক্ষেত্রে অনেক বেশি ফলস পজেটিভ কিংবা ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসে। এর মধ্যেই গত ২৫ এপ্রিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র তাদের উদ্ভাবিত টেস্টিং কিটের নমুনা হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) প্রতিনিধির কাছে কিটের নমুনা তুলে দেওয়া হয়। তবে সরকারের কোনো প্রতিনিধি সেখানে ছিলেন না। দীর্ঘ বিতর্কের পর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গত ৩০ এপ্রিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে তাদের উদ্ভাবিত কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য বিএসএমএমইউ অথবা আইসিডিডিআরবিতে নমুনা জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়। এরপর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২ মে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য ছয় সদস্যের কমিটি করে এবং ১৩ মে তাদের উদ্ভাবিত কিট বিএসএমএমইউতে জমা দেয়। ৩৪ দিন পর বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত জানায়।
Leave a Reply