জাতিসংঘ এবং বিশ্বব্যাংক সর্বসাম্প্রতিক পৃথক পৃথক দুটি প্রতিবেদনে বলেছে, করোনা মহামারীর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব বর্তমানে এমন ভয়াবহ অর্থনৈতিক এবং খাদ্য সংকটের দ্বারপ্রান্তে- যা কেউই গত কয়েক দশকেও দেখেননি। জাতিসংঘ বলছে, করোনার কারণে এমন খাদ্য সংকট বিশ্ব জুড়ে দেখা দেবে- যা গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি। আর পুরো বিশ্ব এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি, যাতে দরিদ্র মানুষই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী সরকারগুলোকে এই মর্মে সতর্ক করে দিয়েছে যে, ত্বরিৎ ও জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই মহাদুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব হবে না। আর এটি সম্ভব না হলে সুদীর্ঘকাল ধরে বিশ্বের কোটি কোটি শিশুসহ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিদারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, যা এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে এ বছরেই করোনার কারণে বিশ্বে ৫ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছেন।
বিশ্বব্যাংক জুন মাসের বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্ভাবনা শীর্ষক প্রতিবেদনে বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনীতি এ বছরে ৫ দশমিক ২ শতাংশ হারে সংকুচিত হবে। আর সামগ্রিক বৈশ্বিক অর্থনীতি এমন এক সুগভীর মন্দার মধ্যে পড়েছে, যার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর দেখা যায়নি। আর ১৮৭০ সালের পরে এবারই প্রথম মাথাপিছু অর্থনৈতিক সক্ষমতার হার সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেবে বলে বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়। উদীয়মান বাজার অর্থনীতির এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি এ বছরে সংকুচিত হবে ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে। আর এর প্রভাব থাকবে পরবর্তী কমপক্ষে ৬০ বছর। আর বিশ্বব্যাপী মাথাপিছু আয় কমবে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হারে – যার ফলে কোটি কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করবেন।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতি চলতি বছরে সংকুচিত হবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ হারে এবং এমন পরিস্থিতিতে মানুষের চাহিদার সংকোচন, কমসংস্থান কমে যাওয়া এবং বেসরকারি বিনিয়োগে অনিশ্চিয়তা দেখা দেবে।
এদিকে, বাংলাদেশের প্রভাবশালী গবেষণা সংস্থা সিপিডি সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলেছে, করোনার কারণে ২০১৬ সালের সাথে তুলনায় বর্তমানে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ শতাংশে। এর পাশাপাশি ভোগ ও বৈষম্যের হারও বেড়েছে।
Leave a Reply