গত অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের সংশোধিত মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু আয় হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ কোটি ৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা কম রাজস্ব আহরণ হয়েছে। এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ সালে আহরণ হয়েছিল ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭৯৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। সে হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। তবে মোট লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
মাসভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুনেও রাজস্ব আহরণ কম হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুনে আহরণ হয়েছিল ৫৩ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুনে আহরণ হয়েছে মাত্র ৪৩ হাজার ৯১ কোটি টাকা। ওই মাসে এককভাবে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৯ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, যা অর্জিত টাকার চেয়ে ২৬ হাজার কোটি টাকা বা ৩৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ কম।
জুনে কাস্টমস খাতে আহরণের চিত্র থেকে আন্দোলনের প্রভাব স্পষ্ট। এ খাতে জুনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা, কিন্তু আহরণ হয়েছে মাত্র ৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের চেয়েও কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুনে কাস্টমস খাতে আহরণ হয়েছিল ৯ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। পুরো অর্থবছরে কাস্টমস খাতের মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৫১০ কোটি টাকা, যার বিপরীতে আহরণ হয়েছে মাত্র ১ লাখ ১৯৮ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে এ খাতে আয় ছিল ৯৯ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা।
ভ্যাট খাতেও জুনে আহরণ কমেছে। ২৬ হাজার ৮৮ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে মাত্র ১৪ হাজার ২১৪ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের তুলনায়ও কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে আহরণ হয়েছিল ২০ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা। পুরো অর্থবছরে ভ্যাট খাতের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা, আর আহরণ হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে এ খাতে আহরণ হয়েছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘গড়ে ছয় মাসের মতো সময় আমরা স্থিতিশীল পেয়েছি। অর্থবছরের শেষ দুই মাস এনবিআরে আন্দোলনের অস্থিরতা ছিল। সিগারেট খাতে ব্যাপক কর ফাঁকি হয়েছে। আমরা এ খাতে রাজস্ব হারিয়েছি। বাজারে অবৈধ সিগারেটে সয়লাব। সিআইসি ও আয়কর গোয়েন্দা সংস্থা ব্যাপক কর ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে। সেই কর আদায়ে সংশ্লিষ্ট সার্কেলগুলো কাজ করছে। আশা করছি, চলতি অর্থবছরে আমরা এ ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে পারব।’
Leave a Reply