সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিকদের মধ্যকার সৃষ্ট চলমান দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা নিরসনে সাংবাদিকদের ৮দফা প্রস্তাবনাসমূহ বাস্তবায়নের দাবিতে সাতক্ষীরার ডিসি’র কাছে এক আবেদন করা হয়েছে। রবিবার (২৭ জুলাই ২০২৫) দুপুরে ডিসি’র অনুপস্থিতিতে তার সিও শহিদুল ইসলামের কাছে বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক ও প্রাক্তন সাংবাদিক এবং সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নতুন ও প্রাক্তন সদস্যদের পক্ষে সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মোঃ মুনসুর রহমান এ আবেদন জমা দিয়েছেন। এতে সাংবাদিকদের পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন দৈনিক বাংলা বাজার পত্রিকার প্রাক্তন জেলা প্রতিনিধি পল্টু বাসার, দৈনিক মনিংসান পত্রিকার প্রাক্তন জেলা প্রতিনিধি পবিত্র মোহন দাশ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সদস্য ও দৈনিক মিল্লাত পত্রিকার প্রাক্তন জেলা প্রতিনিধি মোঃ আলি হোসেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্য বদিউজ্জামান, মোঃ আশরাফুল ইসলাম (খোকন), এসএম মাহিদার রহমান, জহুরুল কবীর, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নতুন সদস্য দৈনিক সাতক্ষীরার সকালের সাহিত্য সম্পাদক শেখ সিদ্দিকুর রহমান, দৈনিক খবর বাংলাদেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শেখ রেজাউল ইসলাম (বাবলু)। এছাড়াও স্বাক্ষর করেছেন দৈনিক সাতনদী পত্রিকার বার্তা সম্পাদক রুবেল হোসেন, দৈনিক হৃদয় বার্তা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মনিরুল ইসলাম, দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা পত্রিকার প্রাক্তন স্টাফ রিপোর্টার মোঃ হাসানুজ্জামান, দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার প্রাক্তন শহর প্রতিবেদক অরুণ বিশ^াস, সাপ্তাহিক অভিযোগ পত্রিকার প্রাক্তন সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মোঃ বায়েজীদ হাসান প্রমূখ।
এবিষয়ে জেলা প্রশাসকের সিও শহিদুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ স্যার অফিসিয়াল কাজে বাইরে থাকায় আবেদনটি রিসিভ করেছি। স্যার অফিসে আসলে স্বাক্ষর পরবর্তী আবেদনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আবেদন সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিক সংগঠন ‘সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব’। যা পেশাদার সাংবাদিকদের দ্বিতীয় গৃহ হলেও বিগতদিনে সংগঠনটি অপেশাদার সাংবাদিকদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছিল। তবে তাদের অধিকাংশের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্নবিদ্ধ, সর্বসময়ে সরকারি-বেসরকারি সকল পর্যায়ের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছে তারা। এতে অন্যান্য পেশাদার সাংবাদিকরা বরাবরই বঞ্চিত থেকেছে।
২০০০ সালের পর থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় নতুন নতুন নামে পত্রিকা প্রকাশিত হতে থাকে। সেমতে জেলায় বাড়তে থাকে সাংবাদিকের সংখ্যাও। তবে প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রমতে ওইসব সাংবাদিকরা সংগঠনে সদস্যর্ভুক্ত হতে পারেনি; তাই বাড়তে থাকে সাংবাদিকদের মধ্যকার ক্ষোভ ও অভিমান। সেই থেকেই প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিকদের উপর কয়েকবার ভাড়াটে বহিরাগতদের দ্বারা হামলা-মামলার উদ্ভব ঘটে। ইতোপূর্বে সংগঠনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা ঐ সাংবাদিকদের সাথে কিছু সদস্য সাংবাদিকদের মধ্যকার সৃষ্ট চলমান দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেই পরিস্থিতি বিগতদিনে কয়েকবার জেলা প্রশাসকের মধ্যস্থতায় মিমাংসাও হয়েছিল।
তবে পরের বছরও একই অবস্থা তৈরি করে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এমনকি ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারী সগঠনের বাপী-সুজন কমিটি পরিষদের এক সভায় নতুন ১৩জনকে সদস্য পদ প্রদান করেন। তাদেরকে সংগঠনের সম্পাদক স্বাক্ষরিত সদস্যপদ প্রদানের চিঠিও দেওয়া হয়। এরমধ্যে ১০ জনের সসদস্যপদ পরে একটি সভা করে বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন ওই পরিষদ নেতৃবৃৃন্দ। তাই নতুন সদস্যপদ প্রদানের পর কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে কাজী নাসির উদ্দীন দিং বাদী হয়ে আব্দুল গফুর সরদার দিং কে বিবাদী করে সিনিয়র সহকারী জজ, সাতক্ষীরা সদর, সাতক্ষীরা আদালতে একটি দায়ের করেন। যার নং-দেওয়ীনী-২০৩/২২। ওই মামলা বাদীপক্ষ রায় পেয়েছিলো। সেই সময়ে ঐ রায়ের বিরুদ্ধে খন্দকার আনিছুর রহমান সহ অন্য একজন বাদী হয়ে কাজী নাসির উদ্দীন সহ অন্য ২ জনকে বিবাদী করে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি আপিল মামলা দায়ের করেন। যার নং-মিস আপিল-২৯/২০২২। সেই মামলায়ও বিবাদীপক্ষ রায় পেয়েছিলো। তবে তা ভায়োলেট করে ঐ ১০জনকে সদস্যপদ না দিয়ে সংগঠনের তৎকালীন সভাপতি মোমতাজ আহমেদ বাপী বাদী হয়ে কাজ নাসির উদ্দীনসহ ২জনকে বিবাদী করে উচ্চ আদালতের সিভি ডিভিশনে একটি আবেদন করেন। যার নং-৩৪১৭/২০২২। সেই আবেদন শুনানীন্তে বিচারক নিম্ম আদালতকে ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়াও উপরিউক্ত ঘটনায় আদালতের মামলা চলমান রয়েছে। এরপূর্বে দেওয়া আদালতের রায় না মেনে ‘সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব’ বিধ্বংসী কর্মকান্ডে মেতে উঠেছিলো ওই সাংবাদিক সিন্ডিকেটের নেতৃবৃন্দ। এবং প্রত্যেক বছর কতিপয় সিনিয়র সদস্যদের ইন্ধনে অবৈধভাবে সংগঠনের কমিটি পাল্টা কমিটি তৈরি হয়। ওই কমিটির নেতৃবৃন্দ নতুন নতুন পত্রিকার সাংবাদিকদের সংগঠনে সদস্যর্ভুক্ত করেন। তবে তাদের ঐক্যমত হলে নতুনদের প্রদানকৃত সদস্যপদ স্থগিত করে বারংবার সাংবাদিকদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলো। আবারও তারা একই ষড়যন্ত্র লিপ্ত।
সম্প্রতি ‘সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব’ ঘিরে সাংবাদিকরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এতে সংগঠনের সদস্য সাংবাদিকদের মধ্যকার সৃষ্ট বিভেদ নতুন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত। এরই জেরে সকল পেশাদার-অপেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজমান। সেটিকে পুঁজি করে উভয় গ্রুপের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ নতুন নতুন পত্রিকার পেশাদার-অপেশাদার সাংবাদিকদের প্রেসক্লাবে সদস্যপদ প্রদান করেছেন। এরমধ্যে কাশেম-আসাদ গ্রুপে ৭৫ জন ও আবু সাঈদ-আব্দুল বারী গ্রুপে ৩৬ জন রয়েছে। তবে উভয় গ্রুপ যে সভা, সমাবেশ ও আন্দোলন করছে, সেখানে সংগঠনের পুরানো সদস্যদের টানতে ব্যর্থ তারা। সেজন্য নতুন সদস্যদের নিয়ে উভয় গ্রুপের সদস্য সাংবাদিকরা প্রেসক্লাবের সংকট নিরসনে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই সার্বক্ষণিক সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত নহে, অনেকে কপি বা সিসি সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ করে। এছাড়াও রয়েছে চিহ্নিত চাঁদাবাজ, মাদকাসক্ত, ব¬াকমেইলার, নারী-লিপ্সু, ধর্ষণ চেষ্টাকারী, দালাল ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী নামধারী সাংবাদিক। তাদেরকে বাদ দিয়ে মূলত পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠনে যুক্ত করার দাবি করেন সাংবাদিকবৃন্দ।
আবেদন সূত্রে আরও জানা গেছে, সরকার নিবন্ধিত দেশের পাশাপাশি জেলা থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন পত্রিকার প্রায় ৭’শতাধিক সাংবাদিক রয়েছে যারা সম্পাদক কর্তৃক পরিচয়পত্র ও নিয়োগপত্র প্রাপ্ত। তবে বিগত দিনে ‘সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব’ এর নির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দ তাদের মধ্যে পেশাদার সাংবাদিকদের সদস্যর্ভুক্ত করেনি, তাই পৃথক পৃথক নামে সাংবাদিক সংগঠন গড়ে তোলেন তারা। যার সংখ্যা বর্তমানে ৮১ এর অধিক। সেপ্রেক্ষিতে প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিকরা বিভাজন ভুলে ঐক্যবদ্ধ হলে এরই ছায়াতলে উপরিউক্ত সংগঠনগুলোর মধ্যকার পেশাদার সদস্য সাংবাদিকরা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে একীভূত হওয়ার সুযোগ পেতো, বন্ধ হতো সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও হয়রানি। গড়ে উঠতো জেলাব্যাপী একটি শক্তিশালী সাংবাদিক নেটওয়ার্ক। তবে নেতৃত্ব থাকা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকগণ বিগতদিনেও তা করেনি। তাদের মধ্যে অধিকাংশ সাংবাদিক পক্ষপাতমূলত সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন। সেমতে অতিদ্রুত উভয় গ্রুপের সাংবাদিকদের ঐক্যমতের ভিক্তিতে সংগঠনের সদস্যপদ হালনাগাদ করে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন।
কার্যতঃ বিগতদিনে উভয় গ্রুপের সাংবাদিক নেতারা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র মেনে চলেনি। সেজন্য ওই গঠনতন্ত্রের কিছু ধারা পরিবর্তন বা সংশোধন আনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন সাংবাদিকরা। এছাড়াও গঠনতন্ত্রের কিছু ধারা জেলার বর্তমান পরিস্থিতি ও সাংবাদিকদের আকাক্সক্ষার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, তাই এগুলো সংস্কার বা সংশোধন করা প্রয়োজন। সেপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের সুচিহ্নিত ৮ দফা প্রস্তাবনাসমূহঃ
(১) কন্ট্রোল কমিশন গঠনঃ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে একটি কন্ট্রোল কমিশন গঠন এর ধারা যুক্ত করা আবশ্যক। ওই কমিশনে জেলা প্রশাসক থাকবেন প্রধান, সদস্য থাকবে জেলা প্রশাসক মনোনীত ৬/৯জন। তারা সংগঠনের কোনো আপাদকালীন সময়ে সংকট নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণকরতঃ উভয় গ্রুপের সাংবাদিকদের সাথে আলোচনান্তে সমাধান করবেন।
(২) পেশাদার সাংবাদিকঃ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রে এক বছরের অধিক সময় সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত থাকলে তারা সাধারণ সদস্যের জন্য আবেদন করতে পারবে উল্লেখ রয়েছে। তবে এই ধারা পরিবর্তন যোগ্য হইতেছে। সেক্ষেত্রে যারা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ সংশ্লিষ্ট কাজের সাথে প্রায় ৫/৮ বছর যুক্ত তাদেরকে পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে চিহ্নিতকরতঃ সাধারণ সদস্য হিসেবে আবেদন করার পরিবেশ সৃষ্টি করা।
(৩) শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়াদি যুক্ত নেই। সেমতে শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয় অবশ্যই গঠনতন্ত্রে যুক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে সাধারণ সদস্যদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনার্স/সমমান/মাস্টার্স এবং সহযোগী সদস্যদের ক্ষেত্রে এইচএসসি/সমমান নির্ধারণ করা প্রয়োজন। (বিঃদ্রঃ আগামীতে যারা সংগঠনের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।)
(৪) সদস্যপদঃ গঠনতন্ত্রের ৪ ধারায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্য ও সহযোগী সদস্য মোট দু’ধরণের সদস্য থাকবে উল্লেখ রয়েছে তা পরিবর্তন করে তিন ধরণের করা প্রয়োজন। যেমনঃ উপদেষ্টা/সম্মানীয় সদস্য, সাধারণ সদস্য ও সহযোগী সদস্য।
(৫) গঠনতন্ত্রের ৪.১ ধারা-সাধারণ সদস্য এর (ক) সাতক্ষীরা থেকে নিয়মিত প্রকাশিত প্রতিটি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকদের সাধারণ সদস্য পদ উল্লেখ রয়েছে তা পরিবর্তন করে সরকার নিবন্ধিত সাতক্ষীরা থেকে নিয়মিত প্রকাশিত প্রতিটি দৈনিক, অনলাইন, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকার সম্পাদকদের জন্য উপদেষ্টা/সম্মানীয় সদস্য পদ সৃষ্টি করতে হবে।
(খ) গঠনতন্ত্রে সাতক্ষীরা থেকে নিয়মিত প্রকাশিত প্রতিটি দৈনিক পত্রিকার সর্বোচ্চ ২ (দুই) জন বেতন উল্লেখ পূর্বক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত সাংবাদিক সাধারণ সদস্য হতে পারবে উল্লেখ রয়েছে তা পরিবর্তন করে সরকার নিবন্ধিত প্রতিটি নিয়মিত প্রকাশিত দৈনিক, অনলাইন, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকার সম্পাদক কর্তৃক পরিচয়প্রাপ্ত বা নিয়োগপত্রধারী এর মধ্যে পেশাদার সাংবাদিকদের সাধারণ সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
(গ) গঠনতন্ত্রে দৈনিক পত্রিকার নিয়োগপত্র প্রাপ্ত ফটো সাংবাদিক ১ জন সাধারণ সদস্য হতে পারবে উল্লেখ রয়েছে তা পরিবর্তন করে সরকার নিবন্ধিত নিয়মিত প্রকাশিত প্রতিটি দৈনিক, অনলাইন, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকার সম্পাদক কর্তৃক পরিচয়প্রাপ্ত বা নিয়োগপত্রধারী এর মধ্যে পেশাদার ফটো সাংবাদিকদের সদস্য হিসেবে যুক্ত করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
(ঘ) গঠনতন্ত্রে আবেদনকারীকে আবেদনের পূর্ববর্তী প্রতিমাসের ২টি করে ৬ মাসের মোট ১২টি সংবাদ যুক্ত করতে হবে তা উল্লেখ রয়েছে তা পরিবর্তন করে কপি বা সিসি সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ করে না তা চিহ্নিতকরতঃ তার নিজ নামীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের কপি আবেদনকারীর আবেদনের পূর্ববর্তী প্রতিমাসের ২টি করে ৬ মাসের মোট ১২টি সংবাদ যুক্ত করার বিধান চালু করতে হবে।
(৬) সংগঠনের সদস্যপদ প্রদানে সম্পাদকদের খেয়ালীপণা বন্ধ নিশ্চিতকরণঃ গঠনতন্ত্রে উল্লেখ্য রয়েছে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকসহ ৩ জন সংগঠনের সদস্য হতে পারবে। সেপ্রেক্ষিতে বিগতদিনে সম্পাদক কর্তৃক প্রেরিত তালিকা অনুসারে সংগঠনের সদস্যপদ প্রদান করা হয়েছে। এরমধ্যে অনেক সম্পাদকের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, ভাই-বোন, চাচা ও নিকট আত্মীয় রয়েছে। যারা কখনও সাংবাদিকতা বা সংবাদ সংশ্লিষ্ট কাজের সাথে জড়িত ছিলো না। অতিদ্রুত তাদের পদ স্থগিতকরতঃ আগামীতে যেন এই ধরণের কাজ না করতে পারে তার বিধান যুক্ত করে সংগঠনের সদস্যপদ প্রদানে সম্পাদকদের খেয়ালীপণা বন্ধ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।
(৭) নামধারী/কার্ডধারী সাংবাদিকদের দৌরত্ব বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়াঃ বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকরা তার প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা সফল করতে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের নিয়োগ প্রদান করেন। এতে জেলাব্যাপী ব্যবসায়ী নামধারী/কার্ডধারী সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়েছে। এছাড়াও রয়েছে চিহ্নিত চাঁদাবাজ, মাদকাসক্ত, ব¬াকমেইলার, নারী-লিপ্সু, ধর্ষক, ধর্ষণ চেষ্টাকারী, দালাল ও হরেক রকম সাংবাদিক। তাদের মধ্যে অনেকে কয়েকটি মোটরসাইকেল/অন্যান্য মাধ্যম যোগে বিভিন্ন জায়গায় যেয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের ন্যায় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের কাছে চাঁদা দাবি করছে। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্নবিদ্ধ। ওই নামধারীদের ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না তারা। সেজন্য গঠনতন্ত্রে চিহ্নিত চাঁদাবাজ, মাদকাসক্ত, ব¬াকমেইলার, নারী-লিপ্সু, ধর্ষক, ধর্ষণ চেষ্টাকারী, দালাল ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী নামধারী সাংবাদিকরা যাতে সংগঠনের সদস্যর্ভুক্ত হতে না পারে তার বিধান যুক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে সদস্যদের ডোপটেস্ট বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়াও উক্ত বিষয়াদি নিয়ে স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকদের সাথে সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সার্বক্ষণিক মতবিনিময় চলমান রাখা আবশ্যক।
(৮) সংগঠনের সদস্যদের নামীয় তালিকা সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণঃ সাংবাদিকতা মহান পেশা। ইতোপূর্বে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাদের অনেকে বর্তমানে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত নেই। এদের মধ্যে অনেকে বিগতদিনে সংগঠনের সদস্য ছিলেন। তবে নানান কারণে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ তাদের নামীয় তালিকা সংরক্ষণ করেনি। তাই তাদের নাম সংগ্রহপূর্বক সংরক্ষণ করা জরুরী প্রয়োজন।
সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। সমাজের দর্পণ। নেতৃত্বের বিরোধে বিগতদিনের ন্যায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের মধ্যে ঘাপটি মেরে বহিরাগত ভাড়াটিয়া এনে সাংবাদিকদের উপর হামলা-মামলার উদ্ভব ঘটাবে, একে অপরের বিরুদ্ধে বিষাদগার ছড়াবে এমনটি কাম্য নহে। সেমতে আপনি (জেলা প্রশাসক) সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিকদের মধ্যকার চলমান দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিরসনে উপরিউক্ত সাংবাদিকদের দাবী ও প্রস্তাবনাসমূহ বাস্তবায়নে উদ্যোগী হবেন এটা বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক ও প্রাক্তন সাংবাদিক এবং সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নতুন ও প্রাক্তন সদস্যদের বিশ^াস।
Leave a Reply