ধুমঘাটে হাঁসার খাল উন্মুক্তের দাবিতে এলাকাবাসীর আন্দোলন

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট গ্রামের বাসিন্দারা হাঁসার খাল উন্মুক্ত করার দাবিতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে খালটি ইজারার আওতায় থাকায় তারা ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের দাবি, খালটি ইজারার পর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় কৃষিকাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে রোপা আমনের মৌসুমে অতিবৃষ্টিতে পানি জমে ধানগাছ পচে যায়, ফলে ফসলহানি ঘটে এবং কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।
এছাড়া খালের বিভিন্ন অংশে বাঁধ এবং নেট-পাটা বসিয়ে পানি চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে জলাবদ্ধতা চরম আকার ধারণ করেছে। সাধারণ মানুষ হাঁস পালন, গবাদি পশু ধোয়া বা খালে নামার সুযোগ পাচ্ছেন না। কেউ নামলে তাকে ‘চুরি’ কিংবা ‘অনধিকার প্রবেশ’-এর অভিযোগে হেনস্তা করা হয়।
মৎস্যচাষিরাও জানান, অতিবৃষ্টির সময়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় মাছের ঘের ডুবে গিয়ে তারা বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। খালের পাশে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বেড়া দিয়ে সবজি চাষ করায় পথচলতেও বিঘ্ন ঘটছে। অভিযোগ করলে সাধারণ মানুষকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাত্র ১ লাখ ১২ হাজার টাকায় খালটি ইজারা নিয়ে ৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকায় তা হস্তান্তর করা হয়েছে। এর পেছনে প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশ রয়েছে বলে দাবি তাদের। প্রতিবাদ করলেই হুমকি-ধমকির শিকার হতে হয়।
এই ইস্যুতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এলাকাবাসীর পক্ষ নিয়েছেন। ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাইজুর রহমান, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শ্যামল কুমার মন্ডল এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাল উন্মুক্ত করার পক্ষে মত দিয়েছেন।
ইতোমধ্যে প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ জন এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। তাদের দাবি, খালটি উন্মুক্ত ঘোষণা করে দ্রুত কালভার্ট নির্মাণের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক।
আন্দোলনকারীদের স্লোগান— “স্বাধীন দেশে শাসন নয়, চাই স্বাধীনতা। হাঁসার খাল জনগণের, এটা জনগণের কাছেই ফিরিয়ে দিন।”

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *