আশাশুনি প্রতিনিধি:
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের চাপড়া ও নওয়াপাড়ায় বেতনা নদীর আড়াআড়ি বাঁধ কেটে প্লাবিত এলাকার পানি সরানোর কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের মনে আনন্দ দেখা দিয়েছে।
বেতনা নদী খনন কাজের জন্য নওয়াপাড়া ও চাপড়ায় আড়াআড়ি মাটির বাঁধন দিয়েছিলেন ঠিকাদার। গত বছরের বর্ষা মৌসুমে বাঁধের কারণে এলাকাবাসী প্লাবনের শিকার হয়ে চরম বিপদগ্রস্ত ছিল। সেসময় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আঃ হান্নান বাঁধ কেটে দিয়ে এলাকাবাসীকে রক্ষা করলেও সময় না থাকায় অনেকের পক্ষে আমন ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। এবছর বেশ আগে থেকে বর্ষার মৌসুমে নদির পানি প্রবাহ ব্যবস্থা করার জন্য দাবীর কথা জানানো হলেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে একটানা বৃষ্টিপাতে আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়ন থেকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ও সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত দীর্ঘ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। হাজার হাজার বাড়িঘর, অফিস, প্রতিষ্ঠান, মাছের ঘের, ফসলী জমি ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে থাকে। অবস্থার প্রেক্ষিতে এলাকার শত শত মানুষ বাঁধ কেটে পানি সরানোর উদ্যোগ গ্রহন করে।
বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আঃ হান্নান জানান, বর্ষা শুরু হলে আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদের সাথে যোগাযোগ করি। ঠিকাদার বাঁধ কেটে দেওয়ার কথা বলে স্কেবেটার সরিয়ে নেয়ায় সন্দেহের সৃ্ষ্টি হয়। তখন এসি ল্যান্ড ও ইউএনও সাহেবের সাথে কথা বলে বৃহস্পতিবার মেম্ববার লিয়াকত হোসেনের নেতৃত্বে প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ নিয়ে আমার উপস্থিতিতে বাঁধ কাটার কাজ করি। স্বেচ্ছাশ্রমে সবাই স্বতঃস্ফুত ভাবে কাজ করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও আশাশুনি সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইন এলাকা পরিদর্শন করেন। সেই থেকে গত ৩ দিন ২০/২৫ জন করে শ্রমিক নিয়ে চাপড়া বাঁধে ও নওয়াপাড়ার বাঁধ কেটে পানি সরানো নির্বিঘ্ন করার কাজ করে আসছি।
বুধহাটার ইউপি মেম্বার লিয়াকত আলী বিশ্বাস জানান, পানি নিস্কাশন না হওয়ায় আমাদের ইউনিয়নের বেশীর ভাগ ঘরবাড়ি, ক্ষেত খামার, মৎস্য ঘের, ফসলী জমি জলমগ্ন হয়ে যায়। আমি নিজেই ঠিকাদারকে বৃষ্টির বেশ আগে বলেছিলাম, পানি সরানোর ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু তিনি তা না করায় বৃষ্টি শুরুর সাথে সাথে ইউনিয়ন জলমগ্ন হলে সাবেক চেয়ারম্যান আঃ হান্নানের মাধ্যমে ডিসি স্যার, ইউএনও স্যারের সাথে কথা বললে তারা বাঁধ কাটার পক্ষে মতামত জানান। চেয়ারম্যানের দিকনির্দেশনা ও নের্তৃত্বে আমরা ৩ শতাধিক মানুষ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বাঁধ কাটার কাজ শুরু করি। দুই দিনের মধ্যে এলাকার পানি বেশ কমেছে। শুধু বুধহাটা নয় উত্তরে ঝাউডাঙ্গাসহ অন্যান্য এলাকা তথা সাতক্ষীরা জেলার বেশীর ভাগ এলাকার পানি বেতনা নদীর মাধ্যমে নিস্কাশন হচ্ছে। সেই বৃহস্পতিবারের পর থেকে হান্নান সাহেবের নেতৃত্বে আমরা চাপড়া ও নওয়াপাড়া বাঁধে পানি চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ২০/২৫ জন করে শ্রমিক কাজ করে আসছে। কিছু ঘের মালিকও তাদের অর্থে কিছু শ্রমিক কাজে লাগাচ্ছেন। এসময় বুধহাটা ইউনিয়ন যুবদলের সিঃ সহ সভাপতি রিপন, আনোয়ারুল হক, আঃ মালেক, মিকাঈল উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply