রাশিয়া ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়ে এতে সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত শুক্রবার (২০ জুন) সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে দেওয়া এক বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
পুতিন বলেন, “ইরান যে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বৈধ এবং আমরা এতে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।” তিনি আরও জানান, “ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো প্রমাণ নেই — না রাশিয়ার কাছে, না আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA)-এর কাছে।”
রুশ প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্য এমন সময়ে এলো যখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক ও উদ্বেগ চলছে। বিশেষ করে ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে পুতিন সেই অভিযোগকে নাকচ করে দিয়েছেন।
রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রকল্পে সহায়তা দিয়ে আসছে। পুতিনের সাম্প্রতিক বক্তব্য সেই ধারাবাহিকতারই অংশ। তিনি বলেন, “যতদিন ইরানের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হবে, ততদিন রাশিয়া তার পাশে থাকবে।”
এছাড়াও পুতিন ঘোষণা দেন, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে রাশিয়া একাধিক শান্তি প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা উভয় দেশকেই সংঘাত থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছি। যুদ্ধ নয়, আলোচনাই হতে হবে পথ।”
পুতিনের বক্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব বরাবরই ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্দিহান। তবে রাশিয়ার এ বক্তব্য ইরানকে কূটনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তিতে সহযোগিতা দেওয়ার মাধ্যমে রাশিয়া শুধু তাদের মিত্রতাই জোরালো করছে না, বরং মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের কৌশলগত অবস্থানও আরও মজবুত করছে।
Leave a Reply