জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তবায়ন না হলে দেশে আবারও স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা: দেশে স্থায়ী গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও কাঙ্ক্ষিত সিস্টেম পরিবর্তনের লক্ষ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরার রাজনৈতিক, নাগরিক ও ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁদের মতে, এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন না হলে দেশে আবারও স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে, যা হবে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সাতক্ষীরা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)-এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও সাতক্ষীরার নাগরিকদের ভাবনা’ শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আসমা উল হুসনা এবং সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় সদস্য মাসুদ রানা। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক নাঈদ আহমাদ।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিগত সরকারের শাসনামলে সাতক্ষীরা জেলায় সবচেয়ে বেশি হত্যা, গুম ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। হাজারো মানুষ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। সেই স্বৈরাচারী ধারা রুখে দিয়েছিল জুলাই আন্দোলন। এই আন্দোলন শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, ভ্যানচালক থেকে শুরু করে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মুক্তির সংগ্রাম ছিল এটি।

তাঁরা বলেন, শহীদদের পরিবার বিচার না পেলে শান্তি পাবে না। বিচার বিলম্বিত হওয়ায় জনগণের মনে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন সরকারের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে হবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা সহকারী সেক্রেটারি ওমর ফারুক, এবি পার্টির জেলা আহ্বায়ক আবদুল কাদের, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হাসানুর রহমান হাসান, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মনজুরুল আলম বাপ্পি, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ ইমরান হোসেন, বৈষম্যবিরোধী কওমী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মাকছুদুর রহমান জুনায়েদ এবং শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে আরিফুজ্জামান প্রমুখ।

 

বক্তারা বলেন, আমরা শুধু ক্ষমতার পরিবর্তন চাই না, চাই সিস্টেমের পরিবর্তন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হলো এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। প্রয়োজনে সংবিধান পরিবর্তন করে হলেও জুলাই ঘোষণাপত্রকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। তা না হলে এটি হবে আন্দোলনের শহীদদের সঙ্গে চরম গাদ্দারি।

 

তাঁরা আরও বলেন, দেশের মেধাবীরা যেন বিদেশে পাড়ি না জমায় এবং আধিপত্যবাদী রাজনীতির অবসান ঘটে—এটা নিশ্চিত করতেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ এখন সময়ের দাবি।

 

জুলাই আন্দোলন’ কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর নয়, এটি ছিল জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। সেই আন্দোলনের রক্তঝরা ইতিহাসকে সম্মান জানিয়ে দ্রুত এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের একমত পোষণ করেন রাজনৈতিক, নাগরিক ও ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *