ন্যাশনাল ডেস্ক :বাংলাদেশে আগামী বছরের জুনের মধ্যে একটি সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। চলমান সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতির পাশাপাশি, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও তিনি জোর দিয়ে বলেন।
বুধবার জাপানের রাজধানী টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগ (জেবিপিএফএল)-এর প্রেসিডেন্ট তারো আসোর সঙ্গে এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন ইউনূস।
চার দিনের জাপান সফরে ‘নিক্কেই ফোরাম ফর এশিয়া’-তে অংশগ্রহণ এবং জাপানি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করতেই ইউনূস এই সফরে রয়েছেন। তিনি স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫ মিনিটে টোকিওতে পৌঁছান।
বৈঠকে তারো আসো বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং একটি স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। উত্তরে ইউনূস জানান, তার নেতৃত্বাধীন সরকার তিনটি প্রধান লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে—সংস্কার, অপরাধীদের বিচার এবং অবাধ নির্বাচন।
তিনি বলেন, “পূর্ববর্তী সরকার আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করেছে, ফলে তরুণদের মধ্যে এক ধরনের গণআন্দোলন সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে তরুণদের আহ্বানে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করি।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে সফল হয়েছি।”
এই সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, “জাপান আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশগুলোর একটি। গত দশ মাসে তারা আমাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে এসেছে। এই সফর এক অর্থে কৃতজ্ঞতা জানানোও বটে।”
বৈঠকে ইউনূস চলমান সংস্কার কার্যক্রম দেখতে তারো আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
জেবিপিএফএল-এর অন্যান্য সদস্যরা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ)-র সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন। উভয় দেশের পক্ষ থেকেই সেপ্টেম্বরে চুক্তি স্বাক্ষরের আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়, যা হলে জাপান হবে বাংলাদেশের সঙ্গে ইপিএ স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জাপানের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, “এই সংকট অনন্য কারণ রোহিঙ্গারা অন্য কোথাও নয়, নিজেদের বাড়ি ফিরতে চায়।”
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ।
Leave a Reply