নিজস্ব প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার তালায় রেজিষ্ট্রেশন বিহীন বন্ধ ক্লিনিক খোলার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন মালিকগণ। লক্ষ লক্ষ টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা।
তালা সার্জক্যাল ক্লিনিকের মালিক বিধান চন্দ্র রায় ও জনসেবা ক্লিনিকের মালিক মধু অবৈধ ভাবে ক্লিনিক পরিচালনা করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এক সময় তালায় ডাক্তারের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। সে অভিজ্ঞতা পূঁজি করে শুরু করেন ক্লিনিক ব্যবসা। সরকারী নীতিমালার তোয়াক্কা না করে অবৈধ ভাবে ক্লিনিক পরিচালনা করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যান। অবৈধভাবে টাকা আয় করে জায়গা কিনে গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল ক্লিনিক।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় , বিধান রায় কোনো ডাক্তার না হয়েও নিয়মিত সিজার, এ্যাপেন্ডিস, টিউমার সহ নানাবিধ অপারেশন করেন। গ্রামের অসহায় গরীব মানুষের বোকা বানিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। অপারেশন থিয়েটারে সিজারের রোগীর শরীরে কখনো টিউমার কখনো এ্যাপেন্ডিস আছে বলে অতিরিক্ত ৪/৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন ডাক্তার নামক এই কসাই।
বিধান চন্দ্র রায় ডাক্তার না হয়েও নিয়মিত আল্ট্রাসনো করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নাম ব্যবহার করেন। এসময় নারী রোগীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়ার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মুসলিম নারী রোগীর মা বলেন, ভালো ডাক্তারের কাছে আল্টাস্নো করার কথা বলে সে নিজে আমার মেয়ের আল্টস্নো করে ৪ শত টাকা নেন। এসময় সে আমার সামনেই মেয়ের গোপন স্থানে হাত দিয়ে টিপ দেয়।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, তালা হাসপাতালের একজন ডাক্তারের সাথে আছে গভীর সখ্যতা। সার্জিক্যাল ক্লিনিকে এই ডাক্তারের নিয়মিত যাওয়া আসা আছে। এমনকি এই ডাক্তারকে ম্যানেজ করতে প্রায়ই ক্লিনিকে এই ডাক্তারের সাথে মদের আসর বসান বিধান চন্দ্র রায়। মাঝে মধ্যে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে এই ডাক্তারের মাতলামির খবর শোনা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে ২ ক্লিনিকের মালিক সাতক্ষীরা -খুলনা ছুটাছুটি শুরু করেছেন। বিভিন্ন নেতাদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন।
জনসেবা ক্লিনিকের মালিক মধু বলেন, আমার নরকোটিক সার্টিফিকেট ছিলো না। সে জন্য ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আমি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে আজ সেই লাইন্সেন নিয়ে সিভিল সার্জনকে দেখিয়েছি। তবে ক্লিনিক খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে কি না জানাননি।
এর আগে ৮ জানুয়ারী দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আঃ সালাম তালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাজিব সরদারকে সাথে নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তালা সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও তালা জনসেবা ক্লিনিক বন্ধ করে দেন।
সার্জিক্যাল ক্লিনিকের মালিক বিধান রায়ের বক্তব্য নিতে বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেন নি এমনকি হোয়াটস অ্যাপে ম্যাসেজ পাঠালেও তিনি কোনো বক্তব্য দেননি।
সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আঃ সালাম বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনো ক্লিনিক খোলার অনুমোদন দেয়া হয়নি। অনুমোদন না নিয়ে কোনো ক্লিনিক মালিক কার্যক্রম পরিচালনা করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply