সন্তান হত্যা’র বিচার দাবিতে চট্টগ্রামে মায়েরা রাজপথে

‘সন্তান হত্যা’র বিচার দাবিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেছেন সর্বস্তরের নারীরা। ভারী বৃষ্টি উপেক্ষা করে এসময় কর্মসূচিতে যোগ দেন হাজারও নারী ও অভিভাবক। এ সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নির্বিচার হত্যা, হামলা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানান নারী সমাজ।

আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন অভিভাবকরা। বিকেল পৌনে ৪টায় মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়। প্রতিবাদী নারী সমাজের ব্যানারে ‘শিক্ষার্থীদের গনতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশের নির্বিচার হত্যা, হামলা গণপ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও সন্তান হত্যার বিচার দাবীতে মায়েরা রাজপথে’ শিরোনামে কর্মসূচি পালন করেন তারা। বিভিন্ন পেশার অভিভাবকরা কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন।

গান, নৃত্য, মাইম ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন অভিভাবক ও শিশুরা। বিকেল সাড়ে ৪টায় ‘শিক্ষার্থীদের পাশে মা’ এই ব্যানারে আরেকদল নারী এসে যোগদান করেন মানববন্ধনে। জনতার ঢলে চেরাগী মোড় থেকে জামাল খান রোড পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ থাকে। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাব থেকে আন্দরকিল্লা হয়ে নিউমার্কেট এলাকায় সন্ধ্যা ৬টায় কর্মসূচি শেষ হয়।

মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন নারী মুক্তি কেন্দ্রের আসমা আক্তার । তিনি প্রতিবাদী নারী সমাজের সমন্বয়ক। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগ দেন গৃহিনী, নারী উদ্যোক্তা, ডাক্তার, ব্যাংকার ও সমাজকর্মীরা। নারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের পুরুষরাও যোগ দেয় মানববন্ধনে।

এ সময় অভিভাবকরা ‘হামার বেটা মারলু কেনে, জবাব চাই, জবাব চাই’, ‘আমার সন্তান মরলো কেন, বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

মানববন্ধনে মাথায় পতাকা বেধে দাঁড়িয়েছিলেন সমাজকর্মী শাহীন শিরীণ। পাশে নিজের ছোট শিশুর হাতে দিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের ছবি। শাহীন শিরীণ সমকালকে বলেন, ‘আমার সন্তান রক্তাক্ত হয়েছে মানে আমরাও রক্তাক্ত। এই স্বাধীন বাংলাদেশে আমাদের সন্তানদের গণকবর দেওয়া হয়। আমরা কার কাছে বিচার চাইবো। এই রাষ্ট্রই তো আমাদের সন্তানকে হত্যা করেছে।’

মানববন্ধনে মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন রিতু পারভিন। তিনি বলেন, ‘দেশের কোনো পরিস্থিতি হলে মায়েরা রাজপথে নামে? এতো হত্যা আর গণগ্রেপ্তার হল। তারপরেও এখন এইচএসসি পরীক্ষার্থী যারা আটক হয়েছে তাদের জেলে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে বলছে। ওরা তো শিশু। আমাদের শিশুরা কেন বিনা অপরাধে জেলে পরীক্ষা দিবে? আমরা তাদের মুক্তি চাই।’

আরেক অভিভাবক ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের ট্যাক্সের টাকা কেনা অস্ত্র দিয়ে পুলিশ আমাদের সন্তানকে হত্যা করে। আমি বলতে চাই, আমাদের সন্তানকে না মেরে আমাদেরকে খুন করেন। ওরা আমাদের ভবিষ্যত। আপনারা আমাদের ভবিষ্যতকে হত্যার নেশায় মেতে উঠেছেন।’ সরকারের প্রতি এই জুলুম বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *