টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরা শহরে জলাবদ্ধতা পানি বন্দী  হাজারও পরিবার

শ্রাবনের মুষলধরায়  সপ্তাহবাপী টানা  বৃষ্টিতেই সাতক্ষীরা শহরে জলাবদ্ধতা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন  হাজারের  অধিক পরিবার ,  পানি সরানোর জন্য সাতক্ষীরা পৌরসভা  কর্তৃপক্ষ  এখনো পর্যন্ত কোন ব্যাবস্হা গ্রহন করেন নি, চরম ভোগান্তিতে সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ।  জলাবদ্ধতা দেখে মাঝে মাঝে মনে হয়, যেন শহরের ভিতর উপকূলীয় অঞ্চলের স্বাদ।
সাতক্ষীরার অন্যতম প্রধান সড়ক সাতক্ষীরা সার্কিট হাউস  মোড়, জেলা পরিষদ মোড় হইতে বাসটার্মিনাল খুলনা রোড়   প্রতিদিন হাজার হাজার  মানুষের চলাচল। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হলেই যেন রাস্তা আর সাগরের মধ্যে তফাৎ পাওয়া যায় না। পাশে ড্রেনের কালো, দুর্গন্ধযুক্ত পানি আর বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে রাস্তার পাশে ঢেউ খেলছে।
এদিকে, সাতক্ষীরা প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও নেই কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা। হাল্কা বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া এটা এখন আর নতুন কিছু নয়। মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে সাতক্ষীরা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায়। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট। এতে চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়ছেন পৌরবাসী।
টানা কয়েকদিন বৃষ্টিতে শহরের অধিকাংশ রাস্তাঘাট জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ পথচারী।
সরেজমিন সাতক্ষীরা পৌরসভার রাজার বাগান, মুন্সীপাড়া, মুনজিতপুর, কাটিয়া, সুলতানপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পানি নিষ্কাশনের কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট। অনেকের বাড়ির উঠানেও জমেছে পানি।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ মাঠসংলগ্ন এলাকার মিজানুর রহমান  বলেন, বৃষ্টিতে কলেজ মাঠসহ কলেজ-পুরাতন সাতক্ষীরা সড়ক তলিয়ে গেছে। একে তো সড়কটি চলাচলের অযোগ্য, তার ওপর বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মানুষজন। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থা যে, চলাচল করতে গিয়ে মানুষ দুর্ঘটনার শিকারও হতে পারেন। নর্দমার পানি এত নোংরা যে, পানি মাড়িয়ে রাস্তা পার হলে পায়ে চুলকানি হয়ে যাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে।
কামালনগরের বাবু জানান, তাদের এলাকাতেও পানি জমে গেছে। ড্রেন বন্ধ হয়ে আছে। নিষ্কাশনের কোনো পথ নেই। রাস্তার ওপর পানি জমেছে। প্রতিবছরই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। পৌর কর্তৃপক্ষের যেন কোনো দায় নেই!
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভায় কার্যকর কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। এতে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এমনিতেই পৌরসভার রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। তার ওপর বর্ষা মৌসুমে পানি জমে দুর্ভোগ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এসব বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ নির্বিকার!
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) শেখ ফিরোজ হাসান বলেন, পৌরসভায় বড় কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায় না। সামান্য যে বরাদ্দ আসে এবং পৌরসভার নিজস্ব কিছু আয় থেকে মাঝে-মধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ড্রেন সংস্কার করা হচ্ছে। তবে সাড়ে ৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। শিগগিরই সড়কের কাজ এবং ড্রেনেজ কাজ শুরু হবে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, কয়েকদিনে এই  পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *