সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাফিয়া খাতুনের বাড়িঘর ভাংচুর,
লুটপাট ও প্রেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সাবেক
চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন হত্যা মামলার কয়েকজন আসামীসহ
১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার
সাতক্ষীরার আমলী আদালত-২তে এ মামলা দায়ের করেন নিহত মোশাররফ
হোসেনের স্ত্রী আকলিমা খাতুন লাকি। বিচারক নয়ন বিশ্বাস
মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
গ্রহণের জন্য কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ
দিয়েছেন।
মামলার আসামীরা হলেন, কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের
রঘুনাথপুর গ্রামের জব্বার তরফদারের ছেলে মোশাররফ হোসেন হত্যা
মামলার আসামী ইয়ার আলী, বাহার আলী, জহুর আলী, একই গ্রামের
বরকতুল্লার ছেলে রেজাউল ইসলাম, আব্দুল খালেকের ছেলে মিজানুর
রহমান, কালিকাপুর গ্রামের শওকত সানার ছেলে সাইফুল সানা,
একই গ্রামের মনু মোড়লের ছেলে শাহীনুর মোড়ল, আজিজ ফকিরের
ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, কৃষ্ণনগর গ্রামের শৈলেন্দ্রনাথ মণ্ডলের ছেলে
রণজিৎ মণ্ডল, একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে রেজাউল খাঁ,
সালাম মোল্লার ছেলে শাহীনুর মোল্লা, সোলাইমানের ছেলে নূর
আহম্মেদ সুরুজ ও সোতা গ্রামের চিত্তরঞ্জন রায় এর ছেলে তপন
রায়।
মামলার বিবরনে জানা যায়, কৃষ্ণনগর ইউপি’র সাবেক
চেয়ারম্যান জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন মোশারারফ
হোসেন হত্যা মামলার (এসটিসি- ২৫৯/২০) আসামী ইয়ার আলী,
বাহার আলী ও জহুর আলীসহ ১৩ জন গত ৫ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা দেশ ত্যাগের রাতে মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে হামলা
চালায়। পাহারাদার শাহীন ও আসিফকে পিঠ মোড়া দিয়ে বেঁধে
নগদ টাকা ও সোনার গহনাসহ আসামীরা সাড়ে ৫ লাখ টাকারবেশি মালামাল লুটপাট করে। পরে তারা প্রেট্রোল ঢেলে ওই বাড়ির
চারটি ঘরের ১০ লক্ষাধিক টাকার ফার্নিচার ও মালামাল পুড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনায় থানায় মামলা নেয়নি পুলিশ। বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা
করা হয়েছে।
মামলার বিসয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা জজ কোর্টের
আইনজীবী অ্যাড. আল আমিন।
এদিকে একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে ৫ আগষ্ট রাত থেকে
চেয়রাম্যান মোশাররফ হত্যা মামলার আসামী ইয়ার আলী , বাহার
আলী, জহুর আলী, তুহিন ছাড়াও রবিউল্লাহ বাহারের নেতৃত্বে
একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে
ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে আসছে। ডাকাতি বন্ধে
পাহারাদারদের উপর গুলি করে পাঁচজনকে জখম করেছে ওই চক্রটি।
তাদের অত্যাচারে সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামসহ এলাকার
শতাধিক মানুষ বাড়ি ছাড়া। এরপরও গত মঙ্গলবার রাতে ওই বাহিনীর
সদস্যরা আলিমউদ্দিন গাজীর প্রতিবন্ধি ছেলে রাশেদুলকে বাড়ি
থেকে তুলে নিয়ে যায়। আতঙ্কে বাড়ি ছেলে পালানোর সময় তারই
ভাই সাবেক ইইপি সদস্য নজরুল ইসলাম পালিয়ে যাওয়ার সময়
তাবে পিটিয়ে জখম করা হয়। এম্বুলেন্সযোগে তাকে ওই রাতেই
সাতক্ষীরায় আনা হয়। জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে ইউপি
চেয়ারম্যান সাফিয়াকে বাড়ি তেকে উদ্ধার করে পুলিশ ও সেনা
সদস্যরা কালিগঞ্জে নিয়ে আসে। প্রতিবন্ধি রাশেদুলকে বাড়ি
থেকে বের না হওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply