ফাইল ছবি
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে গতকাল বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ওই হামলায় আটজন নিহত ও ডজেনের বেশি মানুষ আহত হওয়ার দাবি করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবারের সেই হামলার পর বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি যখন আশ্রয় খুঁজছিল। তখন ফের নতুন করে হামলা শুরু করেছে তেল আবিবের সেনা। এবারের লক্ষ্যবস্তু দক্ষিণাঞ্চলেরই রাফাহ শহর। খবর রয়টার্সের।
রাফাহ এলাকার বাসিন্দারা জানান, আগেরদিন হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে প্রচণ্ড লড়াইয়ের মধ্যেই রাফাহ শহরে রাতারাতি নতুন সামরিক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার মধ্য ও উত্তর গাজায়ও বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে ইহুদি বাহিনী। ওই হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি নেতারা জানিয়েছেন, হামাসের সঙ্গে চলমান তীব্র সংঘাতের শেষ পর্যায়ে রয়েছেন তারা। শিগগিরই আরও নতুন লক্ষ্যবস্তুতে অভিযান চালাবে তেল আবিবের সেনারা।
এদিকে রাফাহ শহরের কেন্দ্রস্থলে দুটি স্থানে হামলা চালিয়ে রাতারাতি বেশ কয়েকটি জেলা দখল করেছে ইহুদি সেনারা। শিগগিরই শহরের আরও পশ্চিম ও উত্তরে অগ্রসর হওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। এতে লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষের দুর্দশা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, তাদের সেনারা রাফাহতে গোয়েন্দাভিত্তিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে। লক্ষ্য অনুসারে বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে এবং বহু হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।
এদিকে হামাসের সশস্ত্র শাখা দাবি করেছে, রাফাহ শহরের পশ্চিমে দুটি ইসরায়েলি ট্যাঙ্কে গোলা বর্ষণ করেছে তারা। এছাড়া গাজা শহরের পূর্ব উপকণ্ঠ শেজাইয়াতে ইসরায়েলি বাহিনীর উপর মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে হামাস যোদ্ধারা।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মধ্য গাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরে দুটি ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানান, শেজাইয়া এলাকায় এক বিমান হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১৭ জন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দেইর আল-বালাহতে আরেকটি বিমান হামলায় একটি গাড়িতে থাকা তিনজন নিহত হয়েছেন।
গাজার বিভিন্ন স্থান ছেড়ে পালিয়ে আসা কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছেন দেইর আল-বালাহতে। শরণার্থীদের অভিযোগ, সেখানে বিশুদ্ধ পানির তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এছাড়া মৌলিক খাদ্যদ্রব্যের মূল্যও বেশি।
দেইর আল-বালাহতে আশ্রয় নেয়া পাঁচ সন্তানের বাবা ৪৭ বছর বয়সী শাবান বলেন, ‘পান করার মতো বিশুদ্ধ পানি নেই। আমরা চড়া দামে লবণাক্ত বা অপরিষ্কার পানি কিনতে বাধ্য হচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যকর খাবারের অভাব এবং দূষণের কারণে বেশিরভাগ বাস্তুচ্যুত পেটে ব্যথা ও হেপাটাইটিসের মতো রোগে ভুগছেন।’
Leave a Reply