জেনে নিন কোন জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কখন খুলবে

ঢাকাসহ চার জেলা বাদে দেশের ৬০ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগে খুলে দেওয়া হবে। পরিস্থিতি দেখে আগামী রোববার থেকে পর্যায়ক্রমে এসব জেলার প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নাশকতার মামলার তদন্ত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে মিলিত হন সরকারের চার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং এক উপদেষ্টা। সেখানেই এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে অংশ নেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

সূত্র জানায়, সভায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা বাড়িয়ে খুলে দেওয়ার বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। সভায় মন্ত্রীরা একমত হন, আগামীকাল শুক্রবার সারাদেশের পরিস্থিতি দেখে তারপর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসকদের পাঠানো প্রতিবেদন সভায় বিশ্লেষণ করা হয়। প্রতিবেদনে উঠে আসে, ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর বাদে অন্য সব জেলার পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এই চার জেলা ছাড়া বাকি জেলাগুলোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হবে। প্রথমে খুলে দেওয়া হবে প্রাথমিক বিদ্যালয়। সব ঠিক থাকলে আগামী রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়া হবে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকাল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গতকাল মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন সমকালকে জানান, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় দেশের আটটি সিটি করপোরেশন এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়। চালু ছিল জেলা ও উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে ২১, ২২ ও ২৩ জুলাই ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়।

গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়নি। এ মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারছি না।

তবে চলমান এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করা সরকারের মূল অগ্রাধিকার বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
১৬ জুলাই সারাদেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা-পলিটেকনিকসহ সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। একই সঙ্গে বন্ধ ঘোষণা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল, ইঞ্জিনিয়ারিংসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সব কলেজও বন্ধ রয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *