নিজস্ব প্রতিনিধি : “রুখবো দূর্নীতি, গড়বো দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ” এই স্লোগানে সাতক্ষীরায় দুর্নীতি দমন কমিশনের আয়োজনে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার সকাল ৯টা থেকে সাতক্ষীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে গণশুনানিতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) মোঃ জহুরুল হক।
এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশন, খুলনার পরিচালক মোনজুরুল মোরশেদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, পুলিশ সুপার মোঃ কাজী মনিরুজ্জামান, দুদকের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী পরিচালক তারুণ কান্তি ঘোষসহ জেলার সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও অভিযোগকারিগন উপস্থিত ছিলেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড, সমাজ সেবা অধিদপ্তর, পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয় স্বাস্থ্য বিভাগ, রেজিষ্ট্রি অফিস, সেটেলমেন্ট অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের দূর্ণীতি তুলে ধরা হয়।
সদর উপজেলার জনৈক ব্যক্তি অর্ভিযোগ করেন,সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে দলিল তুলতে তার ৩ হাজার টাকা লেগেছিল। উত্তরে সাব-রেজিস্টার রিপন মুন্সি জানান,দলিল তুলতে ৮০০ টাকা লাগে। সাথে লাগে ১০০ টাকা। ৩ হাজার টাকা কে নিয়েছে,তা তার জানা নেই।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে কমিশনার (তদন্ত) মোঃ জহুরুল হক বলেন,রেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতির বিষয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে অধিকতর তদন্তের আশ^াস দেন কমিশনার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতির বিষয়ে জনৈক ব্যক্তি তার অভিযোগে বলেন,বিনেরপোতা এলাকায় কুন্দুরডাঙ্গী খালের এক কি.মি. খনন করেছিল মৎস্য অধিদপ্তর। পরবর্তীতে সেই খালের একই জায়গায় খনন দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
এছাড়া গোবিন্দপুর থেকে বিনেরপোতা অভিমুখী ৫কি.মি. বেড়িবাঁধ সংস্কারে ৩ কোটি টাকা খরচ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ও ঠিকাদারের যোগসাজসে ৫ কোটি টাকা উত্তোলন করে ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
তহশীলদার মহসিন আলীর বিরুদ্ধে ৪০ টাকার খাজনা জমা দিতে ১৬০০ টাকা ও এক মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে নামপত্তন করিয়ে দেওয়ার নাম করে ৪০০ হাজার টাকা নিয়েও কাজ না করা বা টাকা ফেরৎ না দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। সাথে সাথে ওই তহশীলদার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেও তাকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করা হয়।
দুর্নীতির বড় অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজকে নিয়ে। মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমানের সময় ৫০ লাখ টাকার এসি, ফার্নিচার ও ল্যাবের বিভিন্ন যত্রাংশ কেনা হয়েছিল। পরবর্তীতে অধ্যক্ষ রুহুল কুদ্দুস সেই সব জিনিসপত্র ব্যবহার না করে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে দুদক কমিশনারের কাছে। এছাড়া অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্র কল্যাণ তহবিলের ৮০ লাখ টাকা তছরুপের অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে আশাশুনি উপজেলার গোকুলনগরের ফারুক হোসেন জানান, বেআইনিভাবে আশাশুনি সহকারি জজ আদালতে তার বিচারাধীন দেঃ ৪৮/২০ নং মামলার নথিতে নিয়মবহির্ভুতভাবে সংযোজনের ব্যাপারে পেশকার শফির বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও তার আবেদন উপস্থাপন করা হয়নি। তবে জেলা প্রশাসক মহোদয় বলেন যে, এখানে যে সমস্ত অভিযোগ উপস্থাপন করা যায়নি সেগুলো প্রতি বুধবার তার অফিসে অনুষ্ঠিত গণশুনানীতে উপস্থাপন করা যাবে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) মোঃ জহুরুল হক বলেন,৩৬টি অভিযোগ পেয়েছি। প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত হবে।
Leave a Reply