পাকিস্তানের ক্রিকেটে প্রতিভার অভাব কখনোই ছিল না। তবে অনেক সময়ই ঘাটতি ছিল দলীয় চেতনার। অনেকেই মনে করেন, অসাধারণ সব ক্রিকেটার নিয়েও পাকিস্তান দল হিসেবে প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি এই কারণেই। এখনকার দলে তেমন কিছুর ছায়া বা ছাপ দেখেন না বাবর আজম। আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে দল শীর্ষে ওঠার পর পাকিস্তান অধিনায়ক বললেন, তার দলের বড় শক্তি দলীয় চেতনা, পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা আর বিশ্বাস।
নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজের চার ম্যাচের চারটিতেই জয়ের পর আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরে উঠে যায় পাকিস্তান। ১৯৯২ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা প্রথমবারের মতো শীর্ষে উঠতে পারল এই সংস্করণে।
ব্যাটসম্যান হিসেবে এই সংস্করণে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে আছেন বাবর আজম। এই সাফল্যের স্বাদ পেয়েছেন তিনি অনেক আগেই। এবার দলও চূড়ায় পা রাখল তার নেতৃত্বেই। চতুর্থ ওয়ানডেতে করাচিতে পাকিস্তানের ১০২ রানের জয়ের পর অধিনায়ক বললেন, শীর্ষে অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করবেন তারা।
“আমার জন্য বেশ সম্মানের ব্যাপার যে পাকিস্তান এক নম্বরে উঠেছে এবং আমি সেই দলের অধিনায়ক। পুরো পাকিস্তানকে অভিনন্দন। সবার সমর্থন, পিসিবি, ম্যানেজমেন্ট ও বিশেষ করে আমার সতীর্থরা, যাদের কারণে দল এক নম্বরে। তাদের প্রচেষ্টা, কঠিন সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে যেভাবে তারা লগেছে, সব জায়গায় যেভাবে পারফর্ম করেছে ও দাপট দেখিয়েছে, তা প্রশংসা করতে হয়।”
“এই ধরনের কিছু অর্জন করতে পারলে অনেক প্রেরণা মেলে। দল হিসেবে অনেক উজ্জীবিত লাগে। চেষ্টা করব এই অবস্থান ধরে রাখতে।”
দলের র্যাঙ্কিং শীর্ষে ওঠার ম্যাচে সেঞ্চুরি করে ম্যাচ সেরা হয়েছে বাবর নিজেই। অবিশ্বাস্যভাবে, ওয়ানডেতে ১৮ সেঞ্চুরি হয়ে গেল তার স্রেফ ৯৭ ইনিংসে। ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০০ ইনিংস খেলার আগে ৫ হাজার রান ছোঁয়ার কীর্তিও তিনি গড়েছেন এই ম্যাচেই।
তার পারফরম্যান্স, ধারাবাহিকতা ও নেতৃত্ব যে দলকে শীর্ষে তোলার বড় নিয়ামক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে বাবর এই কৃতিত্ব দিলেন গোটা দল ও দলীয় আবহকে।
“এই দলের সবচেয়ে বড় শক্তি যে, সবাই একে অন্যের পারফরম্যান্সে খুশি হয়। আমাদের দলের সবচেয়ে ভালো ব্যাপার এটিই। কোনো দিন কেউ পারফর্ম করতে না পারলে অন্যরা চেষ্টা করে তা পুষিয়ে দিতে। ড্রেসিং রুমে আমরা ইতিবাচক আলোচনা করি সবসময়, চেষ্টা করি নেতিবাচকতাকে দুয়ারের বাইরে রাখতে।”
এক নম্বরে জায়গা ধরে রাখার লক্ষ্যেও বাবরের বড় ভরসা দলীয় একতা ও প্রচেষ্টাই। দলের প্রতি তার বার্তা, নিজের সর্বোচ্চটা নিয়ে চেষ্টা করায় যেন কোনো খামতি কারও না থাকে। “আমার চাওয়া এটাই থাকবে দলকে বিশ্বাস জোগানো, তাদের ওপর বিশ্বাস রাখা। তাদেরকে এটা বলা যে, ‘আপনারা বিশ্বের সেরা। বিভিন্ন সময়ে নানা পরিস্থিতিতে পারফর্ম করেছেন। কীভাবে করেছেন, তা আপনারা জানেন। সেটিই প্রতি ম্যাচে আপনাদের করে দেখাতে হবে। বিশ্বাস রাখতে হবে নিজের ওপর।’ এই ব্যাপারগুলিই দলকে এককাট্টা করে রাখে। আমার বার্তা সবসময়ই থাকে নিজের শতভাগ যেন ঢেলে দেয় সবাই। ফল আমাদের হাতে নেই, তা আল্লাহর হাতে। আমাদের হাতে আছে চেষ্টা করা। সেখানে যেন কোনো কমতি না থাকে।
Leave a Reply