দারিদ্র কমে আসা বাংলাদেশের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমে আসার তথ্য উল্লেখ করে জাতিসংঘের চরম দারিদ্র্য ও মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত অলিভিয়ে ডি শুটার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরে চরম দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসা অনেক মানুষ এখন দারিদ্র্যসীমার সামান্য উপরে উঠেছে। এর ফলে হঠাৎ কোনো বিপদ এলে সেটা মোকাবিলা করার মতো অবস্থা তাদের নেই।
তিনি বলেন, ‘অনেক পরিবার, দারিদ্র্যসীমার ঠিক উপরে উঠে এলেও তাদের টিকে থাকার সামর্থ্য নেই। তাদের অর্থ সঞ্চয় করা বা পুঁজি জমানোর সক্ষমতা নেই। ধাক্কা সামলানোর মতো কোনো সম্পদ তাদের নেই। ফলে এই অগ্রগতি ভঙ্গুর।’
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। শুটার মনে করেন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উঠে আসার ধাক্কা সামলাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের মডেল পরিবর্তন করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘রপ্তানি বাড়ানোর চাইতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর দিকে বেশি নির্ভর করা উচিত এই উন্নয়ন মডেলের। যা চীন করেছে ১৫-২০ বছর আগে, যখন তারা স্থানীয়ভাবে মজুরি বাড়াতে শুরু করে। তখন তারা সামাজিক সুরক্ষার পেছনে বিনিয়োগ করতে শুরু করে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে আসার পর বাংলাদেশও এটি করতে পারে এবং করা উচিত।’
বিবিসিকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্থগিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে জানান।
রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাড়া না দেওয়াকে ‘কলঙ্কজনক’ আখ্যা দেন ডি শুটার। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছ থেকে তহবিল কমে আসার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘের এই বিশেষ দূত বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলো তাদের সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছে যে আবেদন করছে, তাতে সাড়া মিলছে না। মানবিক সংস্থাগুলো এ বছরের জন্য ৮৭ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তার অনুরোধ করেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার মাত্র ১৭ শতাংশ পাওয়া গেছে। এটি কলঙ্কজনক।’
বেলজিয়ান আইনজ্ঞ অলিভিয়ে ডি শুটার ২০২০ সাল থেকে জাতিসংঘের চরম দারিদ্র্য এবং মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে কাজ করছেন। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি খাদ্য অধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *