মশাল ডেস্ক : আগামীকাল বাংলা নববষ। বর্নাঢ্য আয়োজনে ১৪৩০ কে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সমগ্র জাতি। ইতোমধ্যে মঙ্গলশোভা যাত্রাকে বন্ধ করতে এক শ্রেনীর প্রতিক্রিয়াশীল চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে। হাইকোটে রিট করেছে একজন আইনজীবী মঙ্গলশোভা যাত্রা বন্ধ করতে। আর এ ঘটনা মুক্তমনের বাঙালীদের মধ্যে প্রচন্ড প্রতিক্রিয়া তৈরী করেছে। সরকারের পক্ষ থেকেও কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারন করা হয়েছে দানবীয় এ শক্তির বিরুদ্ধে। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে ‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা অনুষদ থেকে সকাল ৯টায় বের করা হবে। মঙ্গল শোভাযাত্রা শাহবাগ মোড় হয় পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে। বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ বা পহেলা বৈশাখ জাঁকালোভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দিনটি হবে সরকারি ছুটির দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। ছায়ানট রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করবে। ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে। বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান শুরু হবে জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ গান পরিবেশনের মাধ্যমে। বাংলা নববষের তাৎপর্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস তুলে ধরে এদিন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে এবং দেশের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বৈশাখী শোভাযাত্রা আয়োজন করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন রচনা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকজ মেলার আয়োজন করবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করবে। বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) কর্তৃক বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউডেশন কর্তৃক ফাউডেশন প্রাঙ্গণে নববর্ষ মেলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, কপিরাইট অফিস ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আলোচনা সভা, প্রদর্শনী, কুইজ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট/একাডেমিগুলো তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। বাংলা নববর্ষে সব কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার ও ইফতারের আয়োজন করা হবে। শিশু পরিবারের শিশুদের নিয়ে ও কারাবন্দিদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে এবং কয়েদিদের তৈরি বিভিন্ন দ্রব্যাদি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। সব জাদুঘর ও প্রতœস্থান সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। শিশু-কিশোর, ছাত্র-ছাত্রী, প্রতিবন্ধী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের বিনা টিকিটে প্রবেশের সুযোগ থাকবে। তাছাড়া বাংলা নববষের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে জাদুঘরগুলো বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করবে। এতে বলা হয়, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ও যথাযথ আড়ম্বরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হবে। এদিন সকালে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বৈশাখী র্যালির আয়োজন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। অভিজাত হোটেল ও ক্লাব বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ও ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার/ইফতারের আয়োজন করবে। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ উদযাপন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশেপাশে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র, ঢাকা ওয়াসার পক্ষ থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্থাপন করা হবে। এছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি টিভি, বাংলাদেশ বেতার, এফএম ও কমিউনিটি রেডিও বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াগুলো নিজ উদ্যোগে বাংলা নববর্ষের ওপর বিশেষ অনুষ্ঠানমালা/সম্পাদকীয়/নিবন্ধ ইত্যাদি প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি চ্যানেলগুলো রমনা বটমূলে ছায়ানট আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে। বাংলা নববষের অনুষ্ঠান প্রচারের বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বাংলা নববর্ষ সম্পর্কে অপপ্রচার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ উদযাপনকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষে সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন পার্কে (কালেক্টরেট পার্ক) জাতীয় সঙ্গীত ও এসো হে বৈশাখ গান পরিবেশন এবং অনুষ্ঠানের সূচনা। ১০.১৫টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা (র্যালি) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক পর্যন্ত। সাড়ে দশটায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ। সকাল ১০ টায় গণগ্রন্থাগারে কুইজ, চিত্রাঙ্কন এবং রচনা প্রতিযোগিতা । বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে সকাল ১০ টা থেকে রচনা, চিত্রাঙ্কন ও ক্যানভাসে ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা। সুবিধাজনক সময়ে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ও যথাযথ আড়ম্বরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে। সকালে শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে র্যালি সহকারে মঙ্গল শোভাযাত্রায় যোগদান করবেন। হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার ও এতিমখানায় উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার/ইফতার আয়োজন করা হবে।
শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পাক বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ উপলক্ষে ২৪ এপ্রিল হতে ১৫ (পনের) দিন ব্যাপী লোকজ মেলা/বৈশাখী মেলা আয়োজন করা হয়েংছে।
উদীচী শিল্পী গোষ্টির উদ্যোগে ৯ টায় শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক হতে মঙ্গোলসোভাযাত্রা পোস্ট অফিস মোড় পর্যন্ত। সাড়ে ৯ টায় টাউন স্পোটিং ক্লাব চত্বরে সাস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
Leave a Reply