আগামী রোববার কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালে যে দলটি আর্জেন্টিনার মোকাবেলা করবে তাদের জন্য দু:সংবাদ হচ্ছে প্রতিপক্ষ শিবিরে আগ্রাসন চালানোর জন্য একজন সঙ্গী পেয়ে গেছেন লিওনেল মেসি।
দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে মরক্কোর মোকাবেলা করতে যাওয়া বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স তাদের হোটেল কক্ষে বসেই দেখেছেন ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে হুলিয়ান আলভারেজের চোখ ধাঁধানো পারফর্মেন্স। যার জোড়া গোলে গতকাল প্রথম সেমি-ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে ৩-০ গোলে পরাজিত হয়েছে ক্রোয়েশিয়া।
পেনাল্টি থেকে গোল করে মেসি সুচনা করার পর ক্রোয়েশিয়ার রক্ষনকে তছনছ করে দিয়েছেন আলভারেজ। নিজেদের অংশ থেকে বল নিয়ে দ্রুত গতিতে প্রতিপক্ষের ডি বক্সে ঢুকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে ফের গোল করে আর্জেন্টিনার জয়কে নিরাপদ করে দেন ৯ নম্বর জার্সির ওই স্ট্রাইকার। মেসির বানিয়ে দেয়া বলটি দারুন দক্ষতায় জালে জড়ান তিনি।
ম্যানচেস্টার সিটির ২২ বছর বয়সি এই ফরোয়ার্ড টুর্নামেন্টে এখন চার গোল করছেন। আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসি ও ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের চেয়ে মাত্র এক গোলে পিছিয়ে আছেন আলভারেজ।
গতকাল অসাধারণ ম্যাচ জয়ের পর আলভারেজ বলেন, ‘আমরা এর দাবীদার। আজ আমরা দারুন ম্যাচ খেলেছি। আমরা এখন ফাইনালে, যেটি আমরা চেয়েছিলাম। এখন আমাদের বিশ্রাম নিতে হবে। আশা করি রোববার একটি ভালো ম্যাচ হবে। আমি ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে এই পর্যায়ে আসতে পেরে খুশি। আমরা যেভাবে খেলতে পেরেছি তাতে খুশি। আমরা ফাইনালে খেলার দাবীদার। এটাই আমরা চেয়েছিলাম।’
এই টুর্নামেন্টে শুরুতে মুল একাদশে স্থান পেতে রিতিমত লড়াই করতে হয়েছে আলভারেজকে। প্রথমদিকে ইন্টার মিলানের লটারো মার্টিনেজকেই অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে বেঞ্চে বসে ছিলেন এই ফরোয়ার্ড। মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পাওয়া ম্যাচেও একাদশের বাইরে ছিলেন তিনি।
পোল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেই একাদশে স্থান পান আলভারেজ। ২-০ গোলে ওই ম্যাচে জয়লাভের মাধ্যমে শেষ ষোল নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা। ম্যাচে দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন তিনি। এরপর থেকেই মুল একাদশে স্থায়ী আলভারেজ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলর লড়াইয়ে ২-১ ব্যবধানে জয় পাওয়া ম্যাচে গুরুত্বপুর্ন গোলটিও করেছিলেন তিনি। পরে কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে সমস্যায় ফেলেন তিনি।
সর্বশেষ গতকালের ম্যাচে পুরো মাঠ জুড়ে দুর্দান্ত নৈপুন্যে ক্রোয়েশিয় রক্ষনকে বারবার তছনছ করে দুটি গোলও আদায় করে নেন তিনি। আর্জেন্টাইন কোচ স্কালোনি বলেন,‘ হুলিয়ান খুবই ভালো খেলেছেন। তার গোলের জন্য নয়, বরং কঠোর পরিশ্রম করে সে দলকে সহায়তা করেছে। তার যে বয়স তাতে সে চাইবেই পৃথিবী জয় করতে। এটাই স্বাভাবিক। সে এমন একজন ছেলে যাকে তুমি যা বলবে তাই করবে।’
১৯৮৬ সালে দিয়াগো ম্যারাডোনার দলের হয়ে চার গোল করেছিলেন জর্জ ভালদানো। আর এবার মেসি পেলেন তার নিজের সঙ্গী। এটি এমন একটি ভুমিকা যেটি সাবেক রিভার প্লেট ফরোয়ার্ড স্পষ্টভাবে উপভোগ করছেন। তিনি বলেন,‘ গোটা দেশ ক্রমেই উন্মাদনায় মাতছে। এটা সবার জন্য আনন্দের। আমরা যা করেছি তাতে আমরা খুশি। এখন আমরা আরো কিছু অর্জন করতে যাচ্ছি।
Leave a Reply