ফের সংঘর্ষে জড়ালো আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া


আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া সীমান্তে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ফের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার সকালে রুশ বার্তার বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে দুই দেশের দশক পুরনো বিরোধিতা আবারও সামনে আসলো।

২০২০ সালে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে বিরোধপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখের পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিল আজারবাইজান। মঙ্গলবারের সংঘর্ষে দেশটির সেনা নিহতের কথা স্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে আর্মেনিয়া নিজেদের সেনা হতাহতের কথা জানায়নি। কিন্তু বলেছে, সংঘর্ষ রাতভর চলেছে।

রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, আর্মেনিয়া সরকার রাশিয়ার সঙ্গে একটি সহযোগিতা চুক্তির আওতায় সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর নিরাপত্তা জোট কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গাইনেজশন ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এই বিষয়ে আহ্বান জানাবে।

এছাড়া রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে।

ব্লিনকেন উভয়পক্ষকে বিরোধিতা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন।

সংঘাতের জন্য আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া একে অপরকে দোষারোপ করছে। আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আজারবাইজানের সশস্ত্রবাহিনীর বেশ কয়েকটি অবস্থান ও আশ্রয়কেন্দ্র ও সামরিক স্থাপনা আর্মেনীয় সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণের শিকার হয়েছে। হামলায় মর্টারসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে সেনা ও সামারিক অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আজারবাইজানের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, তাদের সীমান্তে আর্মেনীয় সেনারা গুপ্তচরবৃত্তি শুরু করেছে, অস্ত্র মোতায়েন করেছে এবং সোমবার রাতে খনন অভিযান চালিয়েছে।

দেশটি আরও দাবি করেছে, তাদের পদক্ষেপ ছিল সম্পূর্ণভাবে স্থানীয় ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করে।

আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তুমুল গোলাগুলি চলমান রয়েছে। আজারবাইজানের বড় ধরনের উসকানির পর এই গোলাগুলি শুরু হয়েছে। আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী পাল্টা জবাব দিচ্ছে।

১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত থাকার সময় নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে মধ্যে প্রথম দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। ওই সময় আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের ভূখণ্ড বলে স্বীকৃত অঞ্চলটি দখল করে আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী। ওই এলাকায় বিপুল সংখ্যক আর্মেনীয় মানুষের বসবাস।

২০২০ সালে লড়াই করে অঞ্চলটি আর্মেনিয়ার কাছ থেকে পুনরায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় আজারবাইজান। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ওই সময় সংঘাতের অবসান হয়েছিল। এর পর থেকে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠার চুক্তির জন্য দুই দেশের নেতারা একাধিকবার মিলিত হয়েছেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *