ন্যাশনাল ডেস্ক: দেশে করোনা পরিস্থিতি আবারও ঊর্ধ্বমুখী। দুই মাস পর আবারও কম নমুনা পরীক্ষায় ১০ শতাংশের বেশি শনাক্ত হয়েছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক কম। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে এমন হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাই এখন থেকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং যারা টিকা নেননি তাদের নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। আর বদ্ধ স্থানে সভা করা থেকে বিরত থাকা ও দাফতরিক সভা যথাসম্ভব ভার্চুয়ালি করার সুপারিশ জানিয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, গত ২০ জুলাই একদিনে ১২ শতাংশ ছিল শনাক্তের হার। এরপর আর একদিনে এত শনাক্ত হয়নি। এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর একদিনে ১১ শতাংশ ছিল শনাক্তের হার। তারপর গতকাল রবিবার ১২ দশমিক ৭২ শতাংশ শনাক্ত হারের কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গত জুলাইয়ে ১২ শতাংশ শনাক্তের হার পাওয়া গিয়েছিল ৯ হাজার ৪৭ নমুনার বিপরীতে। আর এখন মাত্র ৪ হাজার ১৪৩ নমুনার বিপরীতে শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৭২ শতাংশ। অর্থাৎ জুলাই মাসের প্রায় অর্ধেক নমুনার বিপরীতে শনাক্তের হার বেশি। তখন শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ১০৪ জন, আর এখন শনাক্ত হয়েছে মাত্র ৫২৭ জন। অর্থাৎ এই মুহূর্তে সংক্রমণের হার বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে সব ক্ষেত্রে শতভাগ সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের জন্য জনসাধারণকে উৎসাহিত করাসহ ৫টি সুপারিশ জানিয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। কমিটির ৫৯তম সভায় এই সুপারিশ করা হয়। অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে আছে, বেসরকারি পর্যায়ে করোনা পরীক্ষার ব্যয় কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রথম, দ্বিতীয় এবং বুস্টার ডোজের কোভিড ভ্যাকসিন টিকা যারা গ্রহণ করেননি, তাদের টিকা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা, অপরিহার্য সামাজিক অনুষ্ঠান বা সভায় মাস্ক পরার সুপারিশ করা হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘করোনা আবারও একটু বেড়েছে। আমাদের এখন থেকেই সচেতন হতে হবে, সতর্ক হতে হবে। মাস্ক পরা আমরা ভুলেই গেছি। মাস্ক পরতে হবে। বিশেষ করে জনসমাগম যেখানে বেশি আছে, সেখানে মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক হলো সংক্রামণ থেকে রক্ষা পাওয়ার ভালো হাতিয়ার। তবে ভালো দিক হচ্ছে মৃত্যুহার এখনও কম আছে। শুধু মৃত্যুহার কম দেখে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমাদের করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।’
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। আজকে ১২ শতাংশে উঠেছে। আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সতর্ক থাকা ছাড়া বিকল্প নেই।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাবলিক হেলথ বিষয়ক অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘করোনা আমাদের ছেড়ে কখনোই যায়নি। ৫ শতাংশের নিচে যখন ২ শতাংশে চলে গেলো, তখনও কিন্তু করোনা ছিল। এখন আবার নতুন একটি সাব ভ্যারিয়েন্ট ভেসে বেড়াচ্ছে। তাতে সংক্রমণ বাড়ছে। ভয়ের কারণ হচ্ছে—বেশি মাত্রায় যদি সংক্রমণ বাড়ে, তাহলে যাদের অন্যান্য রোগ, যেমন- হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, হৃদ রোগীদের ক্ষেত্রে কিন্তু অবস্থা খারাপ হতে পারে। সেজন্য যখন সংক্রমণ বাড়তে থাকে, তখন যা যা সতর্কতা আমাদের নেওয়া প্রয়োজন, তা অবশ্যই নিতে হবে।’
Leave a Reply