অনলাইন ডেস্ক: ইউক্রেনের ওদেসা বন্দর থেকে শস্যভর্তি প্রথম জাহাজটি লেবাননের উদ্দেশে রওনা করেছে। আজ সোমবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এএফপির।ইউক্রেনের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটার দিকে রাজোনি নামে সিয়েরা লিওনের পতাকাবাহী জাহাজটি রওনা করে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, ‘রাজোনি জাহাজটি ওদেসা বন্দর ছেড়ে লেবাননের ত্রিপোলির উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ২ আগস্ট এটির ইস্তাম্বুলে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ইস্তাম্বুলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এর যাত্রা অব্যাহত থাকবে।’ইউক্রেনের অবকাঠামোবিষয়ক মন্ত্রী ওলেকসান্দর কুবরাকোভের তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটিতে ২৬ হাজার টন ভুট্টা আছে। বসফরাস প্রণালি এবং ওই অঞ্চলে জাহাজ চলাচলসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ ইয়োরুক ইসিক বলেন, কাল মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ জাহাজটি বসফরাস প্রণালি মুখে পৌঁছাতে পারে।২২ জুলাইয়ের শস্য চুক্তির আওতায় সামনে আরও কিছু শস্যবাহী জাহাজ ইউক্রেনের বন্দর ছেড়ে যাবে। রাজোনি জাহাজটি তৈরি হয়েছে ১৯৯৬ সালে। এর দৈর্ঘ্য ১৮৬ মিটার এবং প্রস্থ ২৫ মিটার। সিয়েরা লিওনের পতাকার অধীনে চলাচলকারী এ জাহাজটির সক্ষমতা ৩০ হাজার টন।বিশ্বে মোট গম রপ্তানির এক-তৃতীয়াংশই রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে হয়ে থাকে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে কৃষ্ণসাগরে শস্য সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট দেখা দেয়। এ সংকট মোকাবিলায় গত ২২ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শস্য রপ্তানির এক ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের পরপরই বিশ্ববাজারে গমের দাম কমতে শুরু করে।গত জুলাইয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত শস্য ও সার রপ্তানি চুক্তির আওতায় ইউক্রেন থেকে শস্যবাহী জাহাজের এই যাত্রা সম্ভব হয়েছে। চুক্তির অধীনে ইউক্রেনের বৃহত্তম রপ্তানি বন্দর ওদেসাসহ তিনটি বন্দর দিয়ে শস্য ও সার রপ্তানি হবে। চুক্তিতে চেরনোমোরস্ক, ওদেসা ও পিভদেন্নি বন্দর থেকে জাহাজ ছেড়ে যাওয়া এবং অন্য বন্দর থেকে সেখানে জাহাজ আসার জন্য নিরাপদ পথ নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে চুক্তির আওতায় রপ্তানি কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করতে গত বুধবার ইস্তাম্বুলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশেষ যৌথ সহযোগিতা কেন্দ্র চালু করেছে তুরস্ক। যুদ্ধরত দুই দেশ এবং তুরস্ক ও জাতিসংঘের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের ওই কেন্দ্রে নিযুক্ত করা হয়েছে।
তাদের প্রাথমিক কাজ হলো, ইউক্রেনের শস্যবাহী জাহাজগুলো চলাচলের জন্য নিরাপদ পথ পাচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা এবং এগুলোতে নিষিদ্ধ অস্ত্র আছে কি না, তা নজরদারি করা।জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ ‘প্রচণ্ড রকমের খাদ্যসংকটে’ ভুগছে।
Leave a Reply