নড়াইলের মীর্জাপুর কলেজের অধ্যক্ষকে জুতোর মালা পরানো ও আশুলিয়ার শিক্ষককে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা ও লোহাগড়ার দীঘলিয়া সাহাপাড়ায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ দেশজুড়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরা- আশাশুনি সড়কে এ কর্মসুচি পালিত হয়।
মানবাধিকার সংগঠণ স্বদেশ, এইচ আর ডিএফ সাতক্ষীরা, আসক, এইচআরডি সিএসও কোয়ালিশন, এইচআরডি নেটওয়ার্ক, এডাব , বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সাতক্ষীরার আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসুচি চলাকালে বক্তব্য দেন জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক আনিসুর রহিম. সদস্য সচিব অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, স্বদেশ এর নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবু আহম্মেদ, মানবাধিকার কর্মী রঘুনাথ খাঁ, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা কিশোরী মোহন সরকার, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জ্যোস্না দত্ত, গণফোরামের সাতক্ষীরা শাখার সভাপতি আলী নূর খান বাবুল, এমএসএফ এর অ্যাড. মুনিরউদ্দিন, উত্তরণের কর্মকর্তা মনিরউজ্জামান জমাদ্দার, ফরিদা আক্তার বিউটি, পিপি পোদ্দার, আঞ্জুয়ারা বেগম , সাংবাদিক আব্দুল জলিল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাব, ভূমিহীন নেতা আব্দুল ওহাব সরদার, কওছার আলী, আব্দুস সামাদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মহানবীকে কটুক্তি ও ইসলাম ধর্মের অবমাননার ঠুনকো অভিযোগ তুলে কোন প্রকার যাঁচাই বাছাই করার আগেই সংখ্যালঘুদের উপর দিনের পর দিন নির্যাতন , নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। ভাঙা হচ্ছে মন্দির, প্রতিমা। ভাঙচুর ও লুটপাট শেষে বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। সম্প্রতি নড়াইলের মীর্জাপুরের কলেজ অধ্যক্ষ স্বপন বিশ্বাসকে কোন কারণ ছাড়াই জুতোর মালা পরানো হয়েছে। আশুলিয়ার কলেজ শিক্ষক উৎপল সরকারকে তার ছাত্র পিটিয়ে হত্যা করেছে। বাগেরহাটের চিতলমারি উপজেলার শের ই বাংলা কলেজ ছাত্রী রণিত বালা রণি, সেলুন কর্মী কিশোর রায়, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নকীপুরের দেবাশীষ মিস্ত্রীকে ধর্ম অবমানরার গুজব ছড়িয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ ১৫জুলাই নড়াইলের লোহাগড়া থানার দীঘলিয়া সাহাপাড়ায় শতাধিক হিন্দু বাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ সব ঘটনাসহ মুন্সিগঞ্জের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মন্ডল, নওগাঁর শিক্ষক আমোদিনী পাল, ঢাকার লতা সমাদ্দারসহ বিভিন্ন স্থানের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে। এসব ঘটনায় উগ্র মৌলবাদি গোষ্ঠীর সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। দেশজুড়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আওয়ামী লীগ যে সংখ্যালঘু নির্যাতনকে সমর্থন করে না তা ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে প্রমাণ দিতে হবে। সম্প্রতি দেবহাটার পারুলিয়ায় তপন বিশ্বাসকে জমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা, সদরের কুলতিয়ায় অরবিন্দ ঘোষের জমি জবরদখলের চেষ্টা ও তালার ধানদিয়ার মুক্তিযোদ্ধা ললিত মোহন সাহা পরিবারের উপর তবিবর বাহিনীর নির্যাতন ও ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আবেদন জানানো হয়।
Leave a Reply