অনলাইন ডেক্স: চোখের সামনে মা চলে গেলেন। বাবা খুব ভেঙে পড়েছেন। নিজেই এখনও মা চলে যাওয়ার শোক সামলে উঠতে পারিনি। বাবাকে সামলাব কী ভাবে! শেষ কয়েক বছর তো মা খুবই অসুস্থ ছিলেন। আমি স্ত্রী-কে নিয়ে যাদবপুরে একটি আবাসনে থাকি।আর মা-বাবা থাকতেন চেতলায়। অফিস থেকে ফেরার সময় দেখা করতে গেলে আমার হাতটা চেপে ধরতেন। বলতেন, কোথাও যাবি না। আর যখন সুস্থও ছিলেন, তখন তো আমি ফিরলেই চটজলদি কিছু একটা মুখরোচক বানিয়ে দিতেন। অদ্ভুত জাদু ছিল মায়ের হাতে!
সবাই মনে করেন, মা মানেই তিনি শান্ত, গুরুগম্ভীর কেউ। কিন্তু আমার মা ছিলেন একদম তার বিপরীত। সারা ক্ষণ কিছু না কিছু করে চলেছেন। এক জায়গায় বসতে পারতেন না। ছোট থেকেই শুনেছি আমার মা নির্মলা মিশ্র বড় গুণী শিল্পী। কিন্তু কোনও দিন কাউকে সে কথা বুঝতে দেননি।
খুব চকোলেট, আইসক্রিম খেতে ভালবাসতেন। সঙ্গীতশিল্পীদের ঠান্ডা খেতে নেই, এ কথা সকলের জানা। মায়ের ক্ষেত্রে ঘটে এসেছে ভিন্ন। কোনও দিন ভোরবেলা উঠে রেওয়াজ করতে শুনিনি। সময় ধরে তা করতেই হবে, বাধ্যবাধকতা ছিল না। ঠান্ডা জল থেকে যে কোনও পানীয়— ইচ্ছা হলেই খেয়ে ফেলতেন। বয়স যতই বাড়ুক না কেন, মন থেকে ছিলেন সেই ছোট্ট মেয়েটা।দুর্গাসপ্তমীর দিন তাঁর জন্ম। সপ্তমী সেপ্টেম্বরে পড়ুক কিংবা অক্টোবরে ওই দিনেই আমরা জন্মদিন পালন করতাম। বেলুন দিয়ে বাড়ি সাজানো হত। খাওয়াদাওয়া হত। আর তো কয়েক দিন পরেই পুজো। দুর্গা মা আসার আগেই আমার ঘর তো শূন্য হয়ে গেল।
Leave a Reply