নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের মিথ্যা মামলাসহ অত্যাচার নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষক-কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষে মো: শাহিদুজ্জামান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নে অবস্থিত শহীদ স্মৃতি কলেজের সকল শিক্ষক কর্মচারী। ১৯৯৪ সালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম বাঁশদহে প্রতিষ্ঠিত হয় শহীদ স্মৃতি কলেজ। প্রতিষ্টার পর থেকে সুনাম আর সম্মানের সাথে পায়ে পায়ে এগুতে থাকে এ শিক্ষা নিকেতনটি। কিন্তু ২৮/০৬/২০১৫ থেকে বর্তমান কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ ফজলুর রহমানের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্তির থেকে ক্রমশ প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অধ্যক্ষের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরোধীতা করায় শিক্ষক-কর্মচারীরা মিথ্যা মামলাসহ অত্যাচার নির্যাতনে দিশেহারা। অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকে অদ্যাবধি কলেজের অভ্যন্তরীণ অডিটই হয়নি, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর মতো। কলেজ উন্নয়নে তার কোনও দৃষ্টি না থাকলেও বৈধ/অবৈধ ভাবে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে তার জুড়ি মেলা ভার। কলেজের চৌহদ্দি বাড়ানোর কথা বলে জমি ক্রয়ের নামে বার বার নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিকট থেকে প্রায় ০২ কোটি টাকা নিয়েও অদ্যাবধি তা পূরণ হয়নি। নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা তাদের সেই অনুদানের কথা লিখিত আকারে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। সরকারের শিক্ষা বিভাগের কাছ থেকে বহুতল বিশিষ্ট বিল্ডিং নির্মাণের নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে নগদ ৫ লক্ষ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। কলেজে তাঁর অনিয়মিত যাতায়াতের কারণে প্রশাসনিক অবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। দিন দিন কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে, অন্যদিকে রেজুলেশন জালিয়াতি করে(একই রেজুলেশন চারবার পরিবর্তন) অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত অবৈধ অধ্যক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হলেও স্বৈরতান্ত্রিক ভাবে সকল কাজ করে যাচ্ছেন। অর্থলোলুপ শিক্ষাদস্যু এই অধ্যক্ষ কতটা অর্থ পিশাচ-যার প্রমাণ দীর্ঘ ২০/২৫ বছর ধরে যাদের সাথে চাকরি করেছেন, যারা ২৫ বছর অধ্যাপনা জীবনে একটিবার প্রমোশন পেয়েছেন, এমন ১৪ জন প্রভাষকের কাছ থেকে ঘুষ নিতেও কুন্ঠিত হননি। অধ্যক্ষ ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কার্যক্রম শেষে তার নিয়োগ অবৈধ প্রমাণিত হওয়ায় বিগত ২১/০৩/২০১৭ তারিখে তাকে অবৈধ ঘোষণা করে পত্র জারি হয় এবং অবৈধভাবে উত্তোলিত সমস্ত টাকা ফেরৎ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে গভনির্ং বডির সভাপতি অধ্যক্ষের আপন ভগ্নিপতি হওয়ায় সেই আদেশ বাস্তবায়িত করেননি বরং তিনি (অধ্যক্ষ) গায়ের জোরে, অবৈধভাবে কলেজের সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন। এসব অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আমরা বিভিন্ন সময়ে কলেজের সাবেক গভর্নিং বডির সভাপতি তার আপন ভগ্নিপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন (মোবাইল নম্বর-০১৭১৬-৫৮২৪৯০) এর কাছে আবেদন করি কিন্তু তিনি বিষয়টি আমলে নেননি। পরবর্তীতে বর্তমান সভাপতি গোলাম মোরশেদ (মোবাইল নম্বর-০১৭১৫-১২২৯৯৬) এর স্মরণাপন্ন হই, তিনি পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পরে এমপি মহোদয়ের সাথে আলোচনাক্রমে সিদ্ধান্ত নিবেন বললেও অদ্যাবধি কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তাঁর এই অপকর্মকে ধামাচাপা দিতে তিনি অত্যন্ত সুচতুর ভাবে তাঁর দুজন সহকর্মীকে মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। কারণ সেই দুইজন তার অপকর্মের বিরুদ্ধে সর্বদা স্বোচ্চার। তার বিপক্ষে অবস্থানকারীকে এক এক করে ‘‘দেখে নেবেন’’ বলে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে আসছেন। ওই শিক্ষাদস্যুর হাত থেকে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের রক্ষার দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। এসময় অত্র কলেজেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply