ন্যাশনাল ডেস্ক : সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার সুরক্ষায় তিন বছর মেয়াদি সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। বন অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, গত ২৩ মার্চ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক প্রশাসনিক আদেশে ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প’-এর অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার এ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে তিন বছর। এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের মার্চে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে।
মিহির কুমার দো বলেন, সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী শুষ্ক মৌসুম নভেম্বর-ডিসেম্বরের আগে প্রকল্পের কাজ শুরু সম্ভব হবে না। প্রকল্পের অধীনে বাঘ গণনা, বাঘের জীবনাচরণসহ সব ধরনের গবেষণাধর্মী কাজ করা হবে। বাঘের শরীরে বসানো হবে স্যাটেলাইট কলার বা ট্রান্সমিটার। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক বাঘ পর্যবেক্ষণ করা হবে।
মিহির কুমার দো বলেন, যে স্থানগুলোয় বাঘের বিচরণক্ষেত্র সে স্থানগুলোকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বাঘের সংখ্যা নিরূপণ, বাঘের খাদ্য, নিরাপদ আবাসস্থলসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করবেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে পানির উচ্চতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে; যার কারণে সুন্দরবনের উঁচু স্থানেও জলোচ্ছ্বাসের পানি উঠে থাকে। এতে বাঘের আবাসস্থল ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। জলবায়ুর পরিবর্তনের কথা মাথায়
রেখে বনের গহিনে ১২টি মাটির ঢিবি নির্মাণ করা হবে। সুন্দরবনের যেসব নদী-খাল মরে গেছে সেসব এলাকায় ৬০ কিলোমিটার জুড়ে ‘স্টিলের নেট’ দেয়া হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত বলেন, সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় প্রথমত, বন থেকে চোরা শিকারি তাড়াতে হবে। দ্বিতীয়ত, পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষা করতে হবে। বনের ইকোসিস্টেমে কোনো একটা অংশে ব্যাঘাত হলে তার প্রভাব বাঘের ওপর পড়ে। বাঘের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়।
খুলনা সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, সুন্দরবন টিকিয়ে রাখতে হলে বাঘ টিকিয়ে রাখা জরুরি। বাঘই সুন্দরবনের বিশ্বস্ত পাহারাদার।
Leave a Reply