স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের চৌগাছায় প্রতিপক্ষের হামলায় আপন দুই ভাইকে নৃশংস ভাবে হত্যার ঘটনায় আটক আপন দুইভাই আদালতে স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত একই এলাকার আফজাল খানের ছেলে বিপুল ও মুকুলকে আটক করে। একইসাথে হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি-হাসুয়া উদ্ধার করে।
শুক্রবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে দু’জনেই হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল আসামিদের জাবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে এঘটনায় নিহত আয়ুব আলীর মেয়ে সোনিয়া খান বাদী হয়ে আটক দু’জনসহ আফজালের আরেক ছেলে বিল্লাল ও বিল্লালের স্ত্রী রূপালী বেগমকে আসামি করে চৌগাছা থানায় মামলা করেছেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত আয়ুব আলী পরিবারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন বিল্লালেরা।
ঘটনার দিন শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে আয়ুব আলী খানের সাথে দোকানদার মুকুলের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মুকুলের পক্ষ নিয়ে বিল্লাল হোসেন ও বিপুল বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। ওইসময় উত্তেজিত হয়ে আয়ুব আলী খানকে তারা কিল ঘুষিসহ মারপিট করে। আয়ুব আলী খান বাড়িতে ফিরে এই ঘটনা তার পরিবারের লোকজনকে জানান।
পরবর্তীতে তার ভাই ইউনুছ আলী, ভাতিজা আসাদুজ্জামান খান রনিসহ আয়ুব আলী মুকুলের দোকানে গিয়ে প্রতিবাদ করেন। দোকানের সামনে তাদের উপস্থিতি দেখে দোকানদার মুকুল, তার ভাই বিপুল, বিল্লালসহ আরেও কয়েকজন চাপাতি, হাসুয়া, লাটি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।
হামলায় ইউনুস আলী খান, আইয়ুব আলী খান ও আসাদুজ্জামান খান রনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর তারা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদেরকে চৌগাছা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইউনুছ আলী খান ও আয়ুব আলী খানকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া আসাদুজ্জামান খান রনির মাথায় ও হাতে গুরুতর জখম হওয়ায় তাকে যশোর আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চৌগাছা থানার ওসি তদন্ত ইয়াসিন আলম চৌধুরী জানান, ইতিমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত দু’জনকে আটক করা হয়েছে।
তারা হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছে। অপর দুইজনকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান।
এদিকে, একই পরিবারের দু’ভাইকে বৃহস্পতিবার খুনের রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবার মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত তাদের ভাতিজা লিমন হোসেন খান মারা গেছে। শুক্রবার একই বাড়িতে ছিল তিন তিনটি লাশ।
নিহত লিমন হোসেন খান উপজেলার টেঙ্গুরপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা খানের ছেলে। একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply