,কলারোয়া(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধিঃ নারী দিবসে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নাজমা খাতুনকে (৩৫) নামের নারীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আব্দুল আলিম (৪৫) নামের এক লিভারকে আটক করেছে থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে- মঙ্গলবার (৮মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের ইলিশপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামে। ঘটনার বিবরণে নিহত নাজমা খাতুনের প্রথম পক্ষের ছেলে আশিক বাহার জানান-তার মা নাজমা খাতুনের প্রথম বিয়ে হয় কলারোয়াতে। তার বাবা মারা যাওয়ায় ৮ বছর আগে মায়ের বিয়ে হয় কেরালকাতার ইলিশপুরের রাজমিস্ত্রী আব্দুল আলীমের সাথে। বিয়ের পর থেকেই আব্দুল আলীমের মা খাতুন বিবি ও তার ভাইপোরা বিভিন্নভাবে তার মায়ের ওপর নির্যাতন চালাত। মঙ্গলভার আব্দুল আলিম বাজার থেকে সবজি-শাক কিনে নিয়ে বাসায় আসেন। আশিক বাহার আরো জানান, সকালে রান্না না করার অজুহাতে খাতুন বিবির প্ররোচনায় তার মাকে বেধড়ক মারপিট করে বাবা আব্দুল আলীম। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাবা আব্দুল আলিম মা নাজমা খাতুনকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। তখন মারধর থামিয়ে মায়ের জন্য ডাক্তার আনতে গেলেই ঘরের ভেতর মাকে ধরে নিয়ে আবার মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে মায়ের গলা কেটে হত্যা করেন। আশিক বাহার আরো জানান, এর আগেও কয়েকবার আব্দুল আলীমের মা খাতুন বিবি ও তার ভাইপোরা মিলে বাবা আব্দুল আলীম ও মা নাজমা খাতুনের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। বাবা আব্দুল আলিম এ হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছেন। হত্যাকান্ডে জড়িত বাবাসহ সবাইকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও ফাঁসি দাবি করেন তিনি। নিহতের ছেলে আকাশ হোসেন বলেন, সকাল থেকে আম্মু-আব্বু ঝগড়া করছিল। কী নিয়ে ঝগড়া করছিল সেটি আমি জানি না। সকালে রান্না করেনি। পরে আমি রুটি কিনে দিয়ে আসি। আব্বুকে বলি, তুমি রুটি খেয়ে কাজে চলে যাও। তখন দাদি আব্বুকে বলছিল, তুই যদি তোর বউকে না মারিস তবে আগের মতো ভাইপোদের দিয়ে তোকে মার খাওয়াব। পরে আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই। এ সময় আম্মু ঘরে শুয়েছিল। বাইরে গিয়ে আম্মুকে ফোনে কল দিলে আর ফোন ধরেনি। বাড়িতে ফিরে এসে দেখি, আম্মুকে জবাই করে মেরে ফেলেছে আব্বু। দাদির কথা শুনে আম্মুকে মেরেছে আব্বু। কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নাসিরউদ্দীন মৃধা বলেন, পারিবারিক ঝগড়ায় এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আব্দুল আলীম যাত্রীবাহী বাসে পালিয়ে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে উপজেলার কাজিরহাট এলাকা থেকে বাস থামিয়ে তাকে আটক করা হয়। পরিবার থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে যদি কেউ জড়িত থাকে তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে খবর পেয়ে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান ঘটনা স্থান পরিদর্শন করেন। পুলিশ ঘাতক স্বামী আব্দুল আলিম ও নিহত গৃহবধূ নাজমা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছেন।
Leave a Reply