আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে মিয়ানমারে নিহতদের স্মরণে দেশটির সরকারি দফতর এবং সেগুলোর সামনের সড়কে লাল রং ছড়িয়েছে বিক্ষোভকারীরা। বুধবার এক প্রতিবেদনে রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।
মিয়ানমারের ছোটবড় বেশ কয়েকটি শহরে ঘটেছে এই ঘটনা। রয়টার্সসূত্রে জানা গেছে, এটি বিক্ষোভকারীদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল।
এছাড়া বুধবার মিয়ানমারের দ্বিতীয় প্রধান শহর মান্দালয়ে দেশটির কারাবন্দি গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে মিছিল করেছেন হাজারো মানুষ। তাদের অনেকের হাতে ‘আমাদের নেতা-আশা ও ভবিষ্যতকে রক্ষা করো’ – লেখা ফেস্টুন ছিল। অনেকের হাতে ছিল সু চির ছবি।
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। বন্দি করা হয় দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি এবং তার দল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন পর্যায়ের হাজারেরও অধিক কর্মী-সদস্য-সমর্থককে।
বন্দি করার পর সু চির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। সেগুলোর মধ্যে রাষ্ট্রীয় তথ্য পাচারের অভিযোগটি গুরুতর। এতে দোষী হিসেবে প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে সু চির।
এদিকে অভ্যুত্থানের পরপরই সু চি সহ এনএলডি নেতাদের মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভের প্রথম পর্যায়ে দৃশ্যত সংযমের পরিচয় দিলেও ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে রাবার বুলেট, লাঠি, কাঁদানে গ্যাস শেলের পাশাপাশি প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা সরকার।
মিয়ানমারে কারাবন্দিদের সহায়তা দানকারী বেসরকারী সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে দেশটিতে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন ৭১০ জন। এছাড়া কারাঅন্তরীণ অবস্থায় আছেন আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ।
তবে বুধবার মিয়ানমারে কোনো নিহতের সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে গত দু’দিন ধরে দেশটিতে ইন্টারনেট সেবা সীমিত করেছে জান্তা সরকার।
মিয়ানমারে এখন নববর্ষ চলছে বার্মিজ নববর্ষ থিনগিয়াং। মঙ্গরবার ছিল থিনগিয়াংয়ের প্রথম দিন। এমনিতে থিনগিয়াং মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় উৎসব হিসেবে স্বীকৃত হলেও সামরিক অভ্যুত্থান, সু চি সহ দেশের গণতন্ত্রপন্থি নেতা-কর্মীদের কারাবন্দি করা ও সাত শতাধিক নিহতের জেরে চলতি বছর থিনগিয়াং উদযাপন করছে না মিয়ানমার।
সূত্র: রয়টার্স।
Leave a Reply