1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন
৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
Latest Posts
📰প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দীন📰আন্দোলনে সাধারণের পক্ষে দাঁড়িয়ে আস্থার প্রতীক হয়েছে সেনাবাহিনী : ড. ইউনূস📰অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা, সাতক্ষীরা সীমান্তে আটক ২📰উপকূলীয় জীবনের সুরক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে বাগেরহাটে মানববন্ধন📰‘উপকূলীয় নারীদের সফলতা ও জ্ঞানের কথা’ শীর্ষক অভিজ্ঞতা সভা📰বর্ণাঢ্য আয়োজনে সপ্তাহ ব্যাপি বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন📰আশাশুনির বুধহাটা ক্লাস্টারের দুরাবস্থাগ্রস্থ ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাণের ঝুঁকির মধ্যে চলছে ক্লাশ 📰আশাশুনিতে উপজেলা শুমারী  কমিটির সভা অনুষ্ঠিত📰পাইকগাছায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ!প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি📰জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে সাতক্ষীরাতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

আবার জমবে মেলা……….

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১
  • ২৪২ সংবাদটি পড়া হয়েছে

রুবেল হোসেন

বিখ্যাত গীতিকার ও সুরকার লোকমান হোসেন খানের আবার জমবে মেলা বটতলা হাটখোলা অঘ্রাণে নবান্নে উৎসবে …… গানটি বাংলা লোক সংগীতকে করেছে ঐশ্বর্যমন্ডিত। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের যে কালজয়ী গানগুলো সীমাহীন দুঃখ ও অপার শঙ্কার মধ্যেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জোগাত, আশা জাগাত মনে যে একদিন প্রিয় মাতৃভূমি স্বাধীন হবেই, তেমনি একটি গান প্রয়াত লোকমান হোসেন খানের ‘আবার জমবে মেলা বটতলা-হাটখোলা অঘ্রাণে নবান্নের উৎসবে……’। এমন অনেক গান বীর যোদ্ধাদের দারুণভাবে উদ্দীপ্ত করত একাত্তরে, উৎসাহ যোগাত মহারণে ঝাপিয়ে পড়তে। সাহস জোগাত বাঁচার। বর্তমান সময়ে সকলের মাঝে উদ্দীপনা সঞ্চারের জন্য গানটি সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। প্রায় দুই বছর সারাবিশ্ব মহামারীর মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। মৃত্যুও মিছিল বেড়েই চলেছে। আমাদেও দেশেও ক্রমাগত মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে আজ থেকে ১ সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষনা করেছে সরকার। সবকিছু না থামলেও স্বাভাবিক গতি শ্লথ হয়েছে । ঋতু পরিক্রমায় চৈত্র্য সংক্রান্তির মধ্য দিয়ে বিদায় নিয়েছে একটি বছর। পূর্ব আকাশে উদিত হয়েছে নতুন বছরের গনগনে সূর্যের। বছর ঘুওে এলো আরও একটি বৈশাখ, আরও একটি বছর। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমরা আমাদের চিরায়ত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এবারও মঙ্গলবার শোভাযাত্রার মাধ্যমে পহেলা বৈশাখকে বরণ কওে নিতে পারছি না। মহামারী করোনার কারণে গত বছর উৎসবে মাতেনি চারুকলা। বৈশাখী রঙের পোশাক, বাহারী সাজ আর মুখোশে সুসজ্জিত মঙ্গল শোভাযাত্রা রাজপথে বের হয় নি। এবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ব্যস্ততা চোখে পড়েনি চারুকলার শিল্পীদের। এত সবের মধ্যেও আমরা আশাবাদী হতে চাই। আধার কাটবেই, প্রভাত একদিন আসবে। আবার আমরা শামিল হবো মঙø শোভাযাত্রায়, রমনার বটমূলে, ছায়ানট আর বকুলতলায়। বিষাদের সুর লোপ পাবে, চারিদিকে বাজবে আনন্দেও গান। আজ পহেলা বৈশাখ একটি সর্বজনীন আনন্দমুখর উৎসব, যে উৎসবে এ দেশের ধনী-গরিব, উচ্চ-নীচ সব মানুষ সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে, ঝেড়ে ফেলে সব সঙ্কীর্ণতা-মলিনতা ও পশ্চাদমুখিতা দৃপ্ত পদভারে এগিয়ে যাব সম্মুখপানে। মহামারী করোনার পর ‘আবার জমবে মেলা, বটতলা-হাটখোলা…। নতুন আশার আলো নিয়ে হাজির বাংলা নববর্ষ। বাংলাদেশ সহ পার্শ্ববর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও এই দিনটি আনন্দ ও উল্লাসের সঙ্গে পালিত হয়। ইংরেজি ক্যালেন্ডারের ১৪ বা ১৫ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পয়লা বৈশাখ হিসেবে পালিত হয়। ১৪২৮ সনের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তির পর শুরু হলো বাংলা নববর্ষ ১৪২৯।
বাংলা সনের প্রবর্তক হিসেবে মোঘল সম্রাট আকবরের নামই বেশি শোনা যায়। তবে অনেকের মতে, বাংলা পঞ্জিকা উদ্ভাবক সপ্তম শতকের রাজা শশাঙ্ক। পরবর্তী কালে সম্রাট আকবর সেটিকে খাজনা ও রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশে ব্যবহার করতে শুরু করেন। আকবরের সময় প্রচলিত ক্যালেন্ডারের নাম ছিল তারিখ-এ-এলাহি। মনে করা হয়, বাংলা বারো মাসের নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন নক্ষত্র থেকে। যেমন- বিশাখা নক্ষত্র থেকে বৈশাখ, জায়ীস্থা থেকে জৈষ্ঠ্য, শার থেকে আষাঢ়, শ্রাবণী থেকে শ্রাবণ।
ভারতবর্ষে মোঘল শাসনকালে খাজনা দিতে সমস্যায় পড়তেন কৃষকরা। খাজনা শোধে কৃষকদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে কারণে বর্ষ পঞ্জিতে সংস্কার আনেন সম্রাট আকবর। শুরুতেই এই বছরের নাম দেওয়া হয়েছিল ফসলি সন। পরে তা বঙ্গাব্দে পরিণত হয়।
পহেলা বৈশাখ শহুরে সংস্কৃতি না গ্রামীন সংস্কৃতি সে আলোচনায় যেয়ে লাভ নেই। গ্রামে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে উঠার সুবাদে ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি কালি মন্দির সংলগ্ন গায়ের প্রাচীন বটতলায় মেলা বসতো। মেলায় গ্রামীণ যাত্রাপালা, জারি গাণের আসর বসতো। আমরা মেলায় যেতাম। মেলার সবথেকে আকর্ষনীয় ছিলো মিঠাই খাওয়া ও নাগরদোলায় চড়া। টেপা পুতুলের বাহারি পশরা সাজিয়ে বসতে দোকানিরা। কিনতে ভিড় জমাতাম আমরা। জমে উঠতো রীতিমত প্রতিযোগীতা। পহেলা বৈশাখ গায়ের দোকানগুলোও সাজতো বাহারি সাজে। মাইকে বাজতো বাংলা লোক সংগীত, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, পুথি, বাউল ইত্যাদি। পুরাতন হিসাব মিটিয়ে নববর্ষের নতুন খাতা খুলতেন দোকানীরা। চিরায়ত সে প্রথা হালখাতা নামে পরিচিত।
কালক্রমে অপসংস্কৃতি, কুশিক্ষার প্রভাবে, বিশ্বায়নের প্রভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে নববর্ষের সেই আমেজ। আগে যেখানে মেলা বসতো তার সিংহভাগ জায়গায় এখন মেলা বসে না। হালখাতা তো এখন সারা বছর হয়। কিন্তু দোকান থেকে আর গ্রামীন লোকসুর ভেসে আসে না। অশ্লীল চেচামেচি আর নারী বিদ্বেষী কথায় কান ঝালাপালা করে। বারবার আঘাত এসছে বাঙলা সংস্কৃতির উপর। অস্তাকূড় থেকে উঠে আসা একদল খল নববর্ষ উদযাপন করা হারাম ফতোয়া দিয়ে নিজ নিজ অনুসারীদের তা বর্জন করার আহবান জানিয়েছেন। এই সব শয়তানেরা বহুবার বিশ্বশান্তির মঙ্গল কামনায় নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে যে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয় তা প্রতিহতের হুমকি দিয়েছে। ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আকা দেয়ালচিত্র রাতের আধাওে পোড়া মবিল দিয়ে মুছে দেয় মৌলবাদীরা। ২০০১ সালের পহেলা বৈশাখের দিন ভোরে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের ঘটনাস্থলে দুইটি বোমা পুঁতে রাখা হয় এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে তা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি এবং ১০-১৫ মিনিট পর আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়।
বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই সাতজন প্রাণ হারান এবং ২০-২৫ জন আহত হন। পরে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরো তিন জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। যে ঘটনায় হুজি নেতা মুফতি হান্নান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন তাদের উদ্দেশ্য বাঙালী সংস্কৃতি ধ্বংস করে দেশকে পাকিস্তান- আফগানিস্তান বানানো। পরবর্তীতে এই ঘটনায় মুফতি হান্নানকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়।

এত কিছুর পরেও তারুণ্য থামেনি, বীর বাঙালী থামেনি। মঙ্গল শোভাযাত্রা থামেনি। মৌলবাদীদের উদ্ভট চেহারা আর হুমকিতে কর্ণপাত না করে বাঙালী সম্মুখপাণে এগিয়ে চলেছে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে গতবছর মঙ্গল শোভাযাত্রা হয় নি। করোনার প্রকোপ ও সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে এবারও মঙ্গল শোভাযাত্রা হবে না। রমনার বটমূল, বকুল তলা সুরের মুর্ছনায় ভাসবে না। তারপরও আমি আশাবাদী আগামী বছর আমরা নতুন উদ্যামে আবার মিলিত হবো। আবার জাগবে প্রাণের গান। আজ শুভ নববর্ষ পহেলা বৈশাখ। বৈশাখ তুমি এসো শান্তির বাতাশ নিয়ে। এসে মহামারীযুক্ত ধরাকে ধুইয়ে দাও। গ্লানি জরা সবকিছু মুছে দাও। এবারই বিদায় হোক মহামারী। আবার জমুক প্রাণের মেলা। বারবার কানে ভাসছে আবার জমবে মেলা……
আবার মেলা জমবে সবকিছু স্বভাবাবিক হবে এ আমার দৃড় বিশ্বাস।

লেখক: সাধারণ সম্পাদক, আশাশুনি উপজেলা সাহিত্য পরিষদ

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2024
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd