আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মিয়ানমারে সামরিক জান্তাবিরোধীরা জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করেছে। সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে উত্খাত হওয়া পার্লামেন্ট সদস্য, জান্তাবিরোধী বিক্ষোভের নেতা ও জাতিগত সংখ্যালঘু বা আদিবাসীদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে এ ছায়া সরকার গঠন করা হয়েছে। যারা আত্মগোপনে থেকে কাজ করবেন। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ নামে ছায়া সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় কমিটি রিপ্রেজেন্টিং পাইদাউংসু হ্লুতাউ (সিআরপিএইচ)। গতকাল নবগঠিত এ সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, তাদের লক্ষ্য সামরিক শাসনের অবসান ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। খবর রয়টার্স।
গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের নেতা মিন কো নাইং ১০ মিনিটের এক ভিডিও বার্তায় জাতীয় ঐক্য সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জনগণের সরকারকে স্বাগত জানাতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদে দায়িত্বশীলদের নামও প্রকাশ করা হয়। ঐক্য সরকারের স্টেট কাউন্সেলর হিসেবে গৃহবন্দি অং সান সু চিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মিন কো নাইং বলেন, জনগণের ইচ্ছাই হবে তাদের সরকারের অগ্রাধিকার। তবে নতুন এ দায়িত্ব অনেক কঠিন তা স্বীকার করে তিনি আরো বলেন, আমরা এ পরিস্থিতির উৎস থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছি। ফলে আমাদের আত্মত্যাগ করতে হবে অনেক বেশি।
আন্তর্জাতিক সমর্থন ও স্বীকৃতি আদায় হবে ঐক্য সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য। নবগঠিত এ সরকারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রী ড. সাসা সাংবাদিকদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ভেনিজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুয়াইদোকে দেশটির বৈধ নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মিয়ানমারের নেতা। তাই মুক্ত ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব যদি আমাদের প্রত্যাখ্যান করে তাহলে এর অর্থ হলো তারা গণতন্ত্রকেই প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, তাদের লক্ষ্য একটি ফেডারেল ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন গড়ে তোলা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির দলকে ক্ষমতা থেকে উত্খাত করে সেনাবাহিনী। এর পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। গত বছর নভেম্বরে বিশাল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য মিয়ানমারের ক্ষমতায় এসেছিল সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। তবে ওই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল নেয় সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় অং সান সু চিকে। সামরিক শাসনের প্রতিবাদে রাজপথে বিক্ষোভে নেমেছে সাধারণ মানুষ। গত সাড়ে তিন মাসে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সাত শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।
Leave a Reply