মতিয়ার রহমান
সমাজের প্রচলিত যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, সেখানে শিক্ষা লাভের কোনও সুযোগ হয় নাই, প্রাতিষ্ঠানিক কোনও শিক্ষা বলতে যা বুঝায় কোনও সার্টিফিকেট পর্যন্ত নাই, অথচ জ্ঞান বিস্তারের জন্য নিজের সার্মথ্য অনুযায়ী অনেক কিছু করেছেন স্বশিক্ষিত আকবর আলী সরদার, যশোর জেলার শার্শা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলকে আলোকিত করেছেন পাকশিয়া গ্রামে জন্ম নেয়া এই মানুষটি। সমাজের মানুষের জ্ঞান বিস্তারের জন্য পাকশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩৭ শতক জমি দান করেন ১৯৬৭ সালে, ইউনিয়ন পরিষদকে জমি ও ইট দিয়ে স্থায়ী ভিত্তির উপর দাঁড় করান। ১৯৭৭ সালে ডিহি ইউনিয়ন পাবলিক লাইব্রেরীকে( পাকশিয়া) ১৭ শতক জমি দান করেন, যার উপর ভিত্তি করে আজ লাইব্রেরী সম্প্রসারিত হয়েছে।
অর্থ আর দারিদ্রতা যখন গ্রামের মানুষের নিত্য সঙ্গী তখন তাদের জীবন রক্ষার্থে নিজের অর্থ দিয়ে একটি টিউবওয়েল স্থাপন করে গ্রামের মানুষের পানি সরবরাহ অব্যাহত রেখেছিলেন এছাড়াও পুকুর খনন করে মানুষের সেবা করে গেছেন। নিজের অর্থকষ্ট থাকলেও মানুষকে ভালোবেসে নিজেকে তাদের সেবাই আত্মসমর্পন করেছিলেন আমৃত্যু পর্যন্ত। আপদমস্তক একজন সৎ, ত্যাগী, দানশীল ও পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন। তাঁর চরিত্রের বৈশিষ্ঠ্যের কারনে তিনি অন্যদের চেয়ে আলাদা করে বেঁচে থাকবেন।
আকবর আলী সরদার ১৯৯০ সালের ১৮ এপ্রিল জীবনাবাসন হয় ঠিকই, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞলি জানানোর জন্য প্রতি বছর তাঁর সন্তানেরা তাঁর মৃত্যু বার্ষিকীতে বিনামুল্যে দেশের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এবছর কভিডের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওযায় অনুষ্ঠানকরা সম্ভব হয় নাই। মরহুম আকবর আলী সরদারের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং তিনি আজীবন নিজে অর্থ কষ্টে থাকলেও মানুষের কল্যানে নিয়োজিত থাকতে ভালোবাসতেন , শত বাঁধা বিঘœ উপেক্ষা করে অংশ গ্রহন করতেন। প্রচন্ড কাজের মানুষ ছিলেন , কাজ দিয়ে তিনি প্রমান করতেন। ইউনিয়নের উন্নয়নের জন্য তিনি ছিলেন সামনের সারিতে। আলোকিত করেছেন সমাজ ও রাষ্ট্রকে, তিনি এখন আমাদের অনুভব আর অনুভুতির বাইরে কিন্তু খুবই বেদনাদায়ক। তাই এ সময়ে এ সমাজকে এগিয়ে নিতে এমন দানশীল, সৎ, ও পরিশ্রমী আলোকিত মানুষের স্পর্শ খুবই প্রয়োজন।
লেখক: উন্নয়নকর্মী ও কলামিষ্ট।
Leave a Reply