দেবহাটা প্রতিনিধি: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দেবহাটার গাজীরহাট রামনাথপুরে বসবাসরত হিজড়াদের বাড়িতে কালীগঞ্জের খুশি ও ঝুমুর হিজড়ার নেতৃত্বে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১২টায় দেবহাটা প্রেসক্লাব হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন হামলার শিকার দেবহাটা, কালীগঞ্জ ও শ্যামনগর হিজড়া সম্প্রদায়ের গুরু মা খ্যাত রতœা হিজড়া (৫৫)।
সংবাদ সম্মেলনে রতœা বলেন, আমি রতœা- প্রয়াত বেবি হিজড়ার শিষ্য। আমার আদি বাড়ি নরসিংদীতে। আমি প্রায় ৪০ বছর দেবহাটা উপজেলাতে অবস্থান করে তৃতীয় লিঙ্গের সকল সদস্যদের একত্রিকরণ এবং মাতৃ¯েœহে নেতৃত্ব দিয়ে তাদের দেখভাল ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছি। প্রয়াত বেবি হিজড়ার মৃত্যুর পর বাংলাদেশ ও ভারতের হিজড়া সম্প্রদায়ের একাধিক নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে প্রায় ১৪ বছর দেবহাটা, কালীগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার সকল হিজড়ার গুরু মা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। প্রথমদিকে আমি সকল হিজড়াদের নিয়ে দেবহাটা উপজেলার বেজোরআটি এলাকায় বসবাস করতাম। গেল কয়েক বছর আগে আমার শিষ্য খুশি হিজড়া কালীগঞ্জের ঝুমুর সহ কয়েকজন হিজড়াকে নিয়ে গ্রুপিং সৃষ্টি করে তারা বর্তমানে ফুলতলা এলাকায় বসবাস করছে। পূর্বে তিন উপজেলা আমি নিয়ন্ত্রন করলেও, গ্রুপিংয়ের কারনে দেবহাটা ও কালীগঞ্জের আংশিক এলাকা আমার নিয়ন্ত্রনে রেখে আমি আমার সাবেক শিষ্য খুশিকে কালীগঞ্জের বাকি এলাকা থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিই। তারপরও খুশি, ঝুমুর সহ তাদের দলের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে আমাদের নানাভাবে বিরক্ত করায় আমি অন্যান্য হিজড়াদের নিয়ে গাজীরহাটের রামনাথপুরে বসবাস শুরু করি। কিন্তু দেবহাটায় অবস্থানরত আমিসহ আমাদের সকল তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের বিতাড়িত করে গোটা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া হয়ে ওঠে কালীগঞ্জের খুশি ও ঝুমুর। তারা দীর্ঘদিন ধরে আমাদেরকে বিতাড়িত করতে নানা অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ এপ্রিল শনিবার বিকাল ৫টার দিকে খুশি ও ঝুমুরের নেতৃত্বে রামনাথপুরে আমাদের হামলার চেষ্টা চালানো হয়। এসময় হামলাকারীরা বাড়ির ভিতরে ইট পাটকেল নিক্ষেপ এবং আমাদের মারপিট করার লক্ষে বাড়ির গেট ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। এঘটনায় ওই রাতেই আমি বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। ইতোপূর্বে আমাদের সাথে বিভিন্ন সময়ে গোলযোগ সৃষ্টি হলে খুশির গ্রুপ এবং আমাদের গ্রুপ উভয়েই একমত হয়ে আমাদের অভিভাবক তুল্য পারুলিয়ার ইউপি সদস্য গাজী শহীদুল্যাহর মধ্যস্থতায় শালিসের মাধ্যমে একাধিকবার আপোষ মিমাংসা হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি আমাদের বাড়ীতে হামলার পর খুশি ও ঝুমুরসহ তাদের লোকজন আমার এবং আমাদের অভিভাবক তুল্য ইউপি সদস্য গাজী শহীদুল্যাহ ভাইয়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। যা সম্পূর্ন মিথ্যা ও কাল্পনিক। তাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এঘটনার নিন্দা, প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি হামলার ঘটনার তদন্ত পূর্বক জড়িত খুশি, ঝুমুর সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Leave a Reply